শৈলকুপায় রয়েড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং এর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল আজিজ এর নৃতত্বে এক গ্রুপ মাদ্রাসার নতুন বিল্ডিংয়ে অফিস কক্ষ বানিয়ে বসে আছেন।অপর দিকে মাদ্রাসার সুপার, সহ সুপার, এবতেদায়ী প্রধান মাদ্রাসার পুরাতন বিল্ডিংয়ের অফিস কক্ষে বসে আছেন।
“আজ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নানান সমস্যায় জর্জরিত। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা।পৃথিবীব্যাপি একটি স্বতঃসিদ্ধ উক্তি আছে- ‘প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচিত হয় সেটির শিক্ষক দ্বারা, শিক্ষকের কর্মদক্ষতা, সক্ষমতা, মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক কর্মকাণ্ডের সম্মিলিত প্রয়াসের দ্বারা শিক্ষাকর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে।’ অর্থাৎ শিক্ষকরাই হলো প্রতিষ্ঠানের মেইন ফ্যাক্টর বা প্রধান স্তম্ভ তথা মূল চালিকাশক্তি।কিন্তু শিক্ষকদের মাঝে গ্রুপিংয়ের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি হচ্ছে।”
এবিষয়ে মাদ্রাসার সুপার কামাল হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,সহ সুপার লিয়াকত হোসেন স্যার কিছু দিনের মধ্যে অবসরে যাবেন তাঁর অনুরোধে আমরা পুরাতন বিল্ডিংয়ের অফিস কক্ষে থাকার অনুরোধ করি সবাইকে। কিন্তুু আ. আজিজ স্যার আমার কথা না শুনে নিজে কয়েক জন শিক্ষককে নিয়ে নতুন বিল্ডিংয়ে চেয়ারে টেবিল নিয়ে অফিস কক্ষ তৈরী করেন।তিনি বলেন আমরা পুরাতন বিল্ডিংয়ের অফিস কক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান ও এবতেদায়ী প্রধান সহ প্রায় সকল শিক্ষক নিয়ে আছি কিন্তুু তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধানের কথা অমান্য করে কিছু শিক্ষককে নিয়ে নতুন বিল্ডিংয়ে চলে গেছেন।
মাদ্রাসার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যায়,মাদ্রাসার শিক্ষকদের হাজিরা খাতা জোর পূর্বক শিক্ষক আব্দুল আজিজ নিয়ে যান। আজিজ স্যারের কাছে হাজিরা খাতা চাইতে গেলে তিনি লুকিয়ে রাখেন।এবষিয়ে অন্য শিক্ষকরা বলেন,তিনি সময় মতো মাদ্রাসায় আসেন না বলেই হাজিরা খাতা নিজের কাছে রাখেন এবং সেই সাথে আমারা যাতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে না পারি তাই তিনি লুকিয়ে রাখেন।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আব্দুল আজিজ স্যারের নেতৃত্বে কয়েক জন শিক্ষক মিলে সুপার স্যারের অনুমতি বাদে দপ্তরের বাড়িতে খেচরী রান্না করে খাচ্ছেন।এবিষয়ে মাদ্রাসার সুপার স্যারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি তাদেরকে নিশেধ করেছিলাম তাঁরা আমার কথা না শুনে দপ্তরের বাড়িতে খেচরী রান্না করে খেয়েছেন। এতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে অভিভাবকদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন,আব্দুল আজিজ স্যার এলকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিশে মাদ্রাসার স্যারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে আসছিলেন। তিনি সব সময় নিজের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার যোগসাযোগে মাদ্রাসার শিক্ষকদের কে বিভিন্ন ভাবে অপমান অপদস্ত করেন।মাদ্রাসার শিক্ষকদের মাঝে এই গ্রুপিং চলতে থাকলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটবে সেই সাথে অভিবাকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে।
অভিভাবক খলিলুর রহমান বলেন,আমার মেয়ে রয়েড়া মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।আমি কিছুদিন যাবৎ দেখছি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রুপিং চলছে এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি ঘটবে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রুপিং বন্ধ না হলে আমি আমার মেয়েকে অন্যত্র ভর্তি করব।তিনি আরো বলেন,শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমার দাবি আপনি এবিষয়ে একটু তদন্ত করে বিষয়টি সমাধান করবেন।
আর এক অভিবাক বলেন,আমিও শুনেছি রয়েড়া মাদ্রাসায় শিক্ষকদের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রুপিং রয়েছে। এই গ্রুপিংয়ের বিগত দিনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতার সাথে মিশে আ. আজিজ স্যার অনেক স্যারের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে রান্না করে খেয়েছেন।শিক্ষকের কে ভয়ভীতি দেখিয়ে সে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন।
এবিষয়ে সচেতন কিছু মানুষ বলেন,এভাবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। অতিদ্রুত শিক্ষকদের মাঝে গ্রুপিং বন্ধ না হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বাঁধা গ্রস্ত হবে।
এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন গ্রুপি মেনে নেওয়া হবে না।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের অনুমতি ব্যতিত কোন কিছু করা আইনত অপরাধ।তাঁরা যদি প্রতিষ্ঠানের দপ্তরের বাড়িতে রান্না করে খায় সেটা তাদের অপরাধ এরকম কোন সুযোগ নেই।তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ কারা হবে।