ঘূর্নিঝড়ে দানা”র প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। থেমে থেমে ধমকা হাওয়ার পাশাপাশি বইছে ঝড়ো হাওয়া। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পর্যটক দর্শনার্থীরা উত্তাল সমুদ্রে গোসল সহ উম্মাদনায় মেতে উঠেছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ ও থানা পুলিশ মাইকিং করলেও মানছে না পর্যটকরা।
আটকা পরেছে শত শত পর্যটক দর্শনার্থীরা। তবে ঘুর্ণিঝড় দানা উপকুলে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি এখনো।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্নিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা সহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি ও ধমকা ঝড়ো হাওয়া বইছে।
গতকাল বুধবার রাত থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে।
বুধবার বিকেল থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কলাপাড়া উপজেলায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। বর্তমানে আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে। সমুদ্র ও নদ-নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্নিঝড় দানা আজ সকাল ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিন-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। দুর্বল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পটুয়াখালীর পায়রা সহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক রেদোয়ান জানান, আমরা গতকাল কুয়াকাটা আসি। তখন এতটা খারাপ ছিল না। বুধবার রাত থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ো বাতাস বইছে। সমুদ্রে বড় বড় ঢেউ এসে তীরে আঁচড়ে পড়ছে। দেখতে খুবই ভালো লাগছে। উত্তাল সমুদ্রে তারা গোসল করেছেন। আমরা খুব এনজয় করছি।
কুয়াকাটা হোটেল সৈকতের জেনারেল ম্যানেজার আবজাল গাজী জানান, ঘুর্ণিঝড় দানা”র কারনে পর্যটক দর্শনার্থীদের সংখ্যা খুবই কম। হোটেলের ৯০ ভাগ রুমই খালি পরে রয়েছে।
তবে তিনি অভিযোগ করেন, আবহাওয়া যতটা না খারাপ তার চেয়ে মিডিয়ায় বেশি প্রচার করা হচ্ছে। পর্যটকরা ভয়ে আসেনি।
এদিকে ঘূর্নিঝড় দানা মোকাবেলায় ৮২৯ টি সাইক্লোন সেল্টার, সাড়ে ৮ হাজার সেচ্ছাসেবক ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে জেলা প্রশাসন।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের আক্তার জাহান জানান, উপকূলে এলাকা দিয়ে বজ্রবৃষ্টি সহ ঝড়ো হয় বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে নদনদীর পানির উচ্চতা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।