ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে টানা দুদিনের বৃষ্টি ও ঝড়োবাতাসে ঠাকুরগাঁওয়ে পাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। কৃষকরা বলছেন, পাকা আমন ধান ঘরে তোলার এখনই মোক্ষম সময়। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আগামী দুই দিন রোদ না হলে এ সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক স্থানে পাকা ও আধাপাকা ধান গাছ বাতাসে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে পাকা আমন ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে জমিতে কেটে রাখা ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। ধানগুলো ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে আমন চাষীরা।
সদরের আরাজী ঝাড়গাঁও এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, আকাশ পরিস্কার থাকায় জমিতে পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য, কিন্তু গতকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
এ দিকে পাঠানপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি গতকালে এক বিঘা জমির ধান কেটে রেখেছি কিন্তু বৃষ্টির কারণে ফসল মাঠে রয়েছে, তাই দুশ্চিন্তায় আছি। এরমধ্যে ঝড় বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা।
সদরের রায়পুর এলাকার কৃষক জলিল বলেন, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে তাঁদের চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে যেখানে প্রায় ৪০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণ করে আসতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার পাঁচ উপজেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের আগাম জাতের ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আর না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না। ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে যে সমস্ত খেতের ধান নুয়ে পড়েছে, সেসব খেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।