পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২শত বছর ধরে চলে আসা রাস উৎসবে গত কাল থেকে কুয়াকাটায় তীর্থ যাত্রীদের ঢল নেমেছে। পূর্নার্থীদের আগমনে টইটম্বুর কুয়াকাটার শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের প্রাঙ্গনসহ কুয়াকাটার আশেপাশ।
আজ সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে ২ কিঃমি ও পশ্চিমে ১ কিঃমি জায়গা জুড়ে লোকে লোকারন্য। সকাল থেকেই সনাতন ধর্মের লোকেরা ধর্মীয় আচার আচরন পালন করার জন্য শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির এবং আশে পাশে আসন পেতে বসতে শুরু করছে।
এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো তীর্থ যাত্রীদের পদভারে মুখরিত হচ্ছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা এমনটাই বলেন কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরন দাস।
এসময় তিনি আরো বলেন, আজ ১৫ নভেম্বর সকাল ৫ টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে পূর্ণিমা, থাকবে শনিবার (১৬ নভেম্বর ) সকাল ৩ টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পূর্ণিমার এ তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচন ও পূণ্য লাভের আশায় পূর্ণিমাতিথীতে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ কুয়াকাটায় সমুদ্রে পূণ্যস্নান করবেন।
কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর ) সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নাম কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতি। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন ভারতের কবিতা ঘোষ।
এ সময় তিনি বলেন, গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে রাস উৎসব।
আর আগামীকাল শনিবার (১৬ নভেম্বর ) সূর্যোদয়ের আগেই রাস পূর্ণিমা লগ্ন অনুযায়ী সাগর সৈকত কুয়াকাটায় পাপ মোচনের লাভের আশায় নামবে ভক্তদের ঢল। একই দিন সৈকতে অনেকেই আবার ভিন্ন ভিন্ন মানত করা পূজা দিবেন পুরোহিত এনে। নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষও মিলিত হবে রাস পূজা, সমুদ্র স্নানানুষ্ঠানে।
রাস উৎসবে অংশ গ্রহন করা সৌমির বলেন, সারা বছর অপেক্ষা করি এ দিনটির জন্য। আমি ৫ বছর ধরে স্নানে আসি এবং আমি আমার মানত করা পূজা দেই গঙ্গায়। যাতে গঙ্গা মা আমাকে মঙ্গল করে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন গত কাল থেকেই পুরো কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোন দুষ্কৃতকারী যেন কোন সমস্যা না করতে পারে সে বিষয় সজাগ রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছর ধরে চলে আসা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে আমরা ধারণা করছি তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। কুয়াকাটায় পূণ্যস্নানে আগত পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক থানা পুলিশ,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী,টুরিস্ট পুলিশ এবং গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন।
###
আনোয়ার হোসেন আনু
কলাপাড়া- পটুয়াখালী
১৫-১১-২০২৪