ঢাকামঙ্গলবার , ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শৈলকুপায় মাসিক মাসোহারায় অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি উচ্ছেদ আদেশ উপেক্ষার অভিযোগ বনবিভাগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

খুলনা ব্যুরো:
নভেম্বর ১৯, ২০২৪ ৪:৫৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সরকারী অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল (স-মিল)। প্রয়োজনীয় নিয়মনীতি থোরাইকেয়ার করে অবৈধ করাত কলে প্রতিদিন সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ, সেইসাথে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। বেশিরভাগ সময় সচল থাকে এসব স-মিল। মিলের আশপাশের বাড়িতে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে বলে একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না এসব অবৈধ প্রভাবশালী মিল মালিকদের। লাগাম টেনে ধরতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালনকারীই রয়েছেন নিরব। স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও বৈধ করাতকল ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর ডজন খানেকেরও বেশি অভিযোগ দিয়েও সাড়া না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। এছাড়া পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের আদেশ দিলেও শৈলকুপা উপজেলা বন কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান অদ্যবধি ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযোগ উঠেছে, অবৈধ করাতকল মালিকদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে তিনি দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় অর্ধশত স-মিল রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই যুগের পর যুগ এসব স-মিলের মালিকরা ব্যবসা করে আসছে। স-মিল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম নীতি থাকলেও শৈলকুপা উপজেলা জুড়ে এ চিত্র ভিন্ন। বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে সতর্ক করা হলেও চোখের সামনে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করেই চলছে এসব স-মিল। অধিকাংশ স-মিল সড়কের পাশে অবস্থিত আর ফেলে রেখেছে শত শত গাছের গুঁড়ি। ফলে লোকজন মূল সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। যার কারণে অহরহ দুর্ঘটনাও ঘটছে। বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকির অভাবে রাস্তার পাশ, আবাসিক স্থান, বাণিজ্যিক এলাকায় স্থাপিত হয়েছে এসব স’মিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা জুড়ে সর্বত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে এসব স-মিল। স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে এসব অবৈধ স-মিল ব্যবসা করে আসছে। ফলে প্রতি বছর সরকার হারাচ্ছে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব।
জানা যায়, শৈলকুপা পৌর এলাকার হাবিবপুর, কবিরপুর, সিনেমা হলরোড, ফাজিলপুর, চরআউশিয়া ছাড়াও উপজেলার বারইপাড়া, নাদপাড়া, গাড়াগঞ্জ, বসন্তপুর, সাধুহাটি, বরিয়া, কাতলাগাড়ি খুলুমবাড়ি, তমালতলা, কাচেরকোল, কচুয়া, মদনডাংগা, শেখপাড়া, আলমডাংগা, গাড়াখোলা, চড়ইবিল, ভাটই, লাঙলবাধ, ধাওড়া, রয়েড়া, বকশীপুর, হাটফাজিলপুর, আবাইপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার সংলগ্ন ও লোকালয়ে এসব অবৈধ সমিল রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় অর্ধশত করাতকলের কোনো বৈধ কাগজপত্র নাই। বেশকিছু করাতকল একেবারেই স্পর্শকাতর জায়গায় অবস্থিত। যদিও স-মিল স্থাপন বিধিতে বলা হয়েছে, সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটার এবং সরকারি বনভূমির সীমানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স-মিল স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে স-মিল চালানো যাবে না। সেইসাথে স-মিল চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তার পরেও সরকারি সব বিধিনিষেধ উপেক্ষিত হচ্ছে এসব সমিলে। বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। তাই দ্রুত অবৈধ সমিল অপসারণ ও আইনের আওতায় আনার দাবিও তাদের।
উপজেলার রয়েড়া বাজারে অবস্থিত লাইসেন্সবিহীন মায়ের দোয়া স-মিলের মালিক মোঃ রুবেল বলেন, আমরা এখনো লাইসেন্স পাইনি তবে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি খুব দ্রুত আমরা লাইসেন্স পাব। মাইনুল ইসলাম নামের এক অভিযোগকারী বলেন, বিষয়টি বহুবার পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলেও কোন সুরাহ হয়নি, বন বিভাগ কর্মকর্তা ভাটা মালিকদের নিকট হতে উৎকোচ গ্রহণ করেন এবং স-মিল মালিকদের নিটক থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় করেন বলেও দাবি করেন। লাইসেন্স না থাকার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স-মিল মালিক জানান, তারা লাইসেন্স ছাড়াই চলতে পারছেন। তাই লাইসেন্স করার দরকার কী। লাইসেন্স পেতেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় তাই এভাবেই চলছেন তারা। শৈলকুপা টু কাতলাগাড়ী রোডেল বৈকালীন দুধবাজার সংলগ্ন একটি স-মিল সম্পূর্ণ আবাসীকের মধ্যে যার চারিপাশে বাসাবাড়িতে পরিপূর্ণ, দিনভর মিলের শব্দে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নস্টের পাশাপাশি অসুস্থ রোগী ও বৃদ্ধদের বাড়িতে থাকা দায়ভার হয়ে পড়েছে। এজাতীয় মিলের অবস্থান সচারাচর দেখা যায়না, কিভাবে এসব মিলের প্রাথমিক অনুমোদন হয় সেটি স্থানীয়দের নিকট বিরাট প্রশ্নবোধ চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা স-মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইরাদ আলী বলেন, উপজেলাতে অর্ধশত স-মিল রয়েছে এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া কোন স-মিলের লাইসেন্স নেই। মিল সমিতির সাধারণ সম্পাদক এলিট খন্দকার জানান, সমিতিভুক্ত সদস্যদের অনেকবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র করতে বলা হলেও উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তার সাথে বিশেষ যোগাযোগ করে তারা মিল চালিয়ে যাচ্ছেন। এবিষয়ে কর্মকর্তা এবং স-মিল মালিকগণই ভাল বলতে পারবেন কিভাবে চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তা মখলেসুর রহমান বলেন, শৈলকুপাতে কিছু কিছু স-মিলের লাইসেন্স থাকলেও বেশীরভাগ স-মিলের লাইসেন্স নেই। কিছুদিন আগেও আমরা অবৈধ কয়েকটি সমিলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে ওঠা স-মিলের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে, নতুন করে কিছু নোটিশ করা হয়েছে। তিনি বেশিরভাগ সময় স্বাক্ষীর প্রয়োজনে স্টেশনে থাকতে পারেন না বলেও মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন। তবে বিভাগীয় কর্মকর্তার আদেশ উপেক্ষা করে মাসের পর মাস কিভাবে এখনো অবৈধমিলগুলি চলছে বিষয়ে তিনি উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বেশকিছু মিলে নোটিশ করা হয়েছে এবং আরো নোটিশ পাঠানো হবে এর নির্দিষ্ট মেয়াদ পরেই অবৈধ স-মিলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।