রাঙামাটিতে ইউটিউব দেখে কমলা চাষ করে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন এক পাহাড়ি কৃষক। তিনি স্থানীয় একজন মৌজা হেডম্যান। বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে এই কমলা। পাহাড়ে কমলা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে এই কমলা চাষি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার তৈ চাকমা মৌজার হেডম্যান সুদত্ত চাকমা নিজের পড়ে থাকা জমিতে কমলা চাষ করেছেন। এতে সাফল্য পেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে সুদত্ত চাকমা জানায়, ইউটিউব দেখেই প্রথমে কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরে রাঙামাটি থেকে চারা ক্রয় করে কমলার চাষ শুরু করেন স্থানীয় এই হেডম্যান। বিশাল এই কমলা বাগানে রয়েছে তার ৮০০টি কমলা গাছ। নিয়মিত করেন বাগানের পরিচর্যা। তার এই বাগানে রয়েছে দুই জাতের কমলা। একটি দার্জিলিং কমলা অপরটি চায়না ছোট জাতের কমলা।
তিনি আরো জানান, প্রায় ৪বছর আগে তিনি কমলা চাষ শুরু করেন। এবছর বাগানটি সে ৩লক্ষ ৮০হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। আগামী বছর আনুমানিক ১০লক্ষ টাকার অধিক বিক্রি করার কথাও জানান তিনি। কমলার চাষে সাফল্য পাওয়ার পর এবার তিনি চারা উৎপাদন করেছেন। প্রতিপিস ৪০০টাকা মূল্যে দার্জিলিং কমলার চারা বিক্রির কথাও জানান এই কমলা চাষি।
চারা বিক্রির বিষয়ে তিনি জানান, আমি প্রথমে চারা কিনে ঠকেছি। পরে ভালো মানের চারা পাওয়ায় আমি বাগান সাজাতে পেরেছি। আমার মতো কেউ যাতে না ঠকে তাই চারা উৎপাদনের বিষয়টি মাথায় আসে। আমার কাছে চায়না ছোট জাতের কমলা ও বড় সাইজের দার্জিলিং জাতের কমলা চারাও রয়েছে।
স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, এই বাগানের কমলা গুলো সাইজে বেশ বড় এবং সুস্বাদু। বাগানের পাশেই বিক্রি হচ্ছে এই কমলা। তবে কিনতে গেলে এই কমলার জন্য গুনতে হচ্ছে চড়া মূল্য। কেজিপ্রতি মূল্য ধরা হয়েছে ৪০০-৪৫০টাকা। ৪টি কমলাতেই হচ্ছে এক কেজি বা তার বেশি। সে হিসেবে প্রতিটি কমলার মূল্য পড়ে যাচ্ছে ১০০টাকা বা তার বেশি। দাম কিছুটা কম হলে জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার আওতায় আসবে সুস্বাদু এই ফল।
চড়া মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সুদত্ত চাকমা জানান, আমি এবার বাগানের ফল বিক্রি করে দিয়েছি। যার নিকট বিক্রি করেছি সে আবার অন্য এক ব্যক্তির নিকট ৬লক্ষ টাকা মূল্যে বিক্রি করেছে। ওই ব্যক্তিও অন্য আরেক ব্যক্তির নিকট ১১লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছে। এখন ওই ব্যক্তি হয়ত দাম পুষিয়ে নিতে এই দামে বিক্রি করছে।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তপু আহমেদ জানান, নানিয়ারচরে এবার ১২৫হেক্টর জমিতে কমলার ফলন এসেছে। সেই হিসেবে ১হাজার মেট্রিক টন কমলার ফলন এসেছে। লেবু জাতীয় ফল নিয়ে আমাদের কৃষি বিভাগের একটি প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পটি শেষের দিকে। তবে আগামীতে আবারো এজাতীয় কোন ফলের প্রকল্প গ্রহনের ও পরিকল্পনা রয়েছে।