খাগড়াছড়ি জেলার সার্বিক আইন—শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও গতিশীল রাখার লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ফৌজদারী মামলার আসামী গ্রেফতার, দীর্ঘদিনের বিলম্বিত পরোয়ানা তামিল, অভ্যাসগত চোর—ডাকাত চক্রের বর্তমান অবস্থান নির্ধারণ ও তথ্য সংগ্রহ সহ বিভিন্ন প্রকার উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে জেলার সকল পর্যায়ের অফিসার ও ফোর্সদের নিকট জোর তাগিদ প্রদান করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় (২৮ নভেম্বর) রাতে খাগড়াছড়ি থানার একটি চৌকস টিম শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামীকে গ্রেফতার করে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মেরিনা ত্রিপুরা (১৬) মামলার বাদীনির মেয়ে গত (২৭ নভেম্বর) বিকালে নিজমোবাইলে টাকা রিচার্জ শেষে দোকান হতে বাড়িতে ফেরার সময় আগে থেকে উৎ পেতে থাকা বিবাদী গোপিনাথ ত্রিপুরা (২২) মেরিনা ত্রিপুরাকে ভয় দেখিয়ে তার চোখ, মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক জৈনক নওবিক্রমের বাগানের বিপরীত পাশে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের উত্তর-পশ্চিমে জঙ্গলের ভিতর নিয়া মাটির উপরে শোয়াইয়া ধর্ষণের চেষ্টাকালে বাদীনির মেয়ে বাধা প্রদান করিলে বিবাদী বাদীনির মেয়ের গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে।
এসময় মেয়ের নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু করে। তারপর বিবাদী গোপিনাথ ত্রিপুরা ভিকটিম মেরিনা ত্রিপুরার গলায়, নাকে, মুখে হাতে পায়ে শরীরে উপর্যুপরি কিল, ঘুষি ও লাথি মারিয়া নীলা-ফুলা জখম করে, তাহার পরনের সেলোয়ার ও জামা কাপড় খুলে জোরপূর্বক মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণ শেষে পূনরায় গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা কালে অজ্ঞান হয়ে যায় মেরিনা ত্রিপুরা।
এমতাবস্থায় ধর্ষিতা মারা গেছে মনে করে ধর্ষিতাকে ঘটনাস্থলে রেখে পালিয়ে যায় গোপিনাথ ত্রিপুরা।
পরবর্তীতে এলাকার লোকজন বাদীনির মেয়েকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করিয়া দ্রুত খাগড়াছড়ি জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
বর্তমানে বাদীনির মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়।
মামলা রুজুর পরবতীর্তে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় খাগড়াছড়ি সদর থানার চৌকস টিম ও খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মামলায় ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত আসামী গোপিনাথ ত্রিপুরাকে, দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জানা যায় গোপিনাথ ত্রিপুরা সদর থানার ৪নং পেরাছড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ল্ড ৫মাইল কালাপানিছড়া গ্রামের অলদ মোহন ত্রিপুরার ছেলে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে বিধি মোতাবেক যথাসময়ে সোপর্দ করা হবে।
আসামীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতে অনুরূপ যে কোন অপরাধের ক্ষেত্রে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ যথাযথ আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে জেলার আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সদা সচেষ্ট।