রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড খামার পাড়ায় জেএসএস সন্তু গ্রুপের গুলিতে প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের ১ কালেক্টর নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও ২ জন।
রোববার (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার এই রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম নির্মল খীসা (৩২)। নিহত নির্মল রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার তৈচাকমা গ্রামের সুনীল বিহারী খীসার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুক্তি-পন্থী জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এর সশস্ত্র সদস্যরা চুক্তি-বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ প্রসীত)-এর ১ কালেক্টরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোর থেকেই সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে ছিল। রূপায়ন চাকমার নেতৃত্বে জেএসএস সন্তু গ্রুপের ৬-৭ জনের একটি সশস্ত্র দল সাপছড়ির তৌমিদুং সড়কের কাছে অবস্থান নেয়।
সকাল ৯টার দিকে ইউপিডিএফের অর্থ বিভাগের ৩ সদস্য (কালেক্টর) সাংগঠনিক কাজে বের হলে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি চালায়। আকস্মিক হামলায় আহত দু’জন কোনোমতে নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও, নির্মল খীসা গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে।
হত্যাকাণ্ডের পর সন্ত্রাসীরা দ্রুত কাটাছড়ি স্বর্গপুর বনভাবনা কেন্দ্রের দিকে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা ১জন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি-পন্থী জেএসএস ও চুক্তি-বিরোধী ইউপিডিএফের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। প্রতিনিয়ত খুন, অপহরণ ও গোলাগুলির ঘটনায় সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘর্ষের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিহিংসামূলক হামলা ও পাল্টা হামলা পাহাড়ি জনপদকে অস্থির করে তুলেছে। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
প্রশাসনের কাছে দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার ও সশস্ত্র গ্রুপগুলোর দৌরাত্ম্য দমন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।