সপ্তাহখানেক ধরে ব্যাপক আয়োজন। বাড়ির অন্দর-বাহির জুড়ে অভিজাত সাজ-সজ্জা মিলিয়ে সে এক রাজসিক আয়োজনই বটে!।খাবারের জন্য আয়োজন করা হয় বরিশাল ক্লাবে।ভাড়া বাবদ দেয়া হয় ৭৫ হাজার টাকা।
তবে এখনো ভ্যাট পরিশোষ করা হয়নি বলে জানালেন বরিশাল ভ্যাট অফিসের উপ কমিশনার মো: নেয়ামুল হাসান।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিতর্কিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর কন্যা আয়েশা সিদ্দিকা এশার বিয়েতে দেখা গেছে ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিস্টদের দোষরদেরও।
১১ এপ্রিল শুক্রবার বরিশাল ক্লাবে
বিবাহের আয়োজন করা হয়। সেখানে সতের শত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা ছিলো। দুপুর থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত চলে মেহমানদের আপ্যায়ন। এমনকি মাইকিং করে খাওয়ানো হয়।
বিয়ের খাবারের মেন্যুতে ছিল কাচ্চি,মুরগীর রোস্ট,কাবাব,জর্দা,বোরহানী,সাদাভাত। এক হাজার সাতশত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়। পুরো আয়োজনকে দেখভাল করেন অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী।
এশার বিয়েকে কেন্দ্র করে সপ্তাহ ধরে চলছিল প্রস্তুতি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য সাজসজ্জার জন্য নামি দামি সরঞ্জামাদি আনা হয়। বরিশাল বোর্ডের ইতিহাসে এমন রাজকীয় বিয়ে আর দেখেনি বিয়েতে অংশ নেয়া বোর্ডের কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজকীয় এ বিয়ের জন্য সপ্তাহ ধরে ব্যাপক আয়োজনে দুহাতে খরচ করেন মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী।
বরিশাল ক্লাবে কর্মরত একজন কর্মী জানান, খাবারসহ অন্যান্য কর্মে ব্যয় হয়েছে কোটি টাকার ওপর। সবমিলে এ বিয়েতে কোটি টাকার ওপরে খরচ হয়েছে।
বিয়েতে আমন্ত্রিত অনেকেই প্রশ্ন করেন এমন রাজসিক বিয়েতে ইউনুস স্যার এত টাকা কোথায় পেলেন।
এদিকে ফ্যাসিবাদের দোষর ইউনুস আলী সিদ্দিকী পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু,বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের বিশেষ সুপারিশে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদটি বাগিয়ে নেন।সুত্র জানায়,বোর্ডের চেয়ারম্যান পদটি রাজনৈতিক পদ।দলীয় অনুগত ছাড়া এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়না।চতুর ইউনুস আলী সিদ্দিকীর মেয়ের বিয়ে নিয়েও রাজনীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সচেতসন মহল।৫ আগষ্টের পরে ভোল্ট পাল্টে নিজেকে বিএনপির একনিষ্ঠ লোক দাবী করেন।সেটা প্রমান করেছেন মেয়ের বিয়েতে বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রন করে।
স্বৈরাচারের দোসর ইউনুস আলী সিদ্দিকী আওয়ামীলীগ সরকারের নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও তিনি এখন বিএনপির লোক বলে পরিচয় দিচ্ছেন।বোর্ডে যোগদানের পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড করে একাধিকবার সংবাদপত্রের শিরোনামও হয়েছেন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
১১ শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহন করে।দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে রদবদলের প্রক্রিয়া শুরুও করেন ।ইতিমধ্য সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নাধীন।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (কলেজ অনুবিভাগ) যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান জানান, “দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।
স্বৈরাচারের দোসর আওয়ামী কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত ইউনুস আলী সিদ্দিকী বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে তদবির শুরু করে এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ আকড়ে রেখেছেন।
যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান আরও জানান, নতুন চেয়ারম্যানদের নিয়োগ ও বর্তমানদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার পরই প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ইউনুস আলী সিদ্দিকী, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধ্যাপক স. ম. আব্দুস সামাদ আজাদ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রকিব উল্লাহকে প্রত্যাহার নিয়েও আলোচনা চলছে।
অদশ্য কারনে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ইউনুস আলী সিদ্দিকীর প্রত্যাহার প্রক্রিয়া থমকে গেছে।
উল্লেখ্য,বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর সোমবার যোগদান করেন।
ইউনুস আলী এর আগে ঝালকাঠি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।এছাড়া তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) হিসাববিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট গ্রামে।