“পলিথিনের ব্যবহার পরিহার করি, পাট পণ্যের বাংলাদেশ গড়ি”স্লোগান কে সামনে রেখে ময়মনসিংহে পাট অধিদপ্তর ও জিডিপিসি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুরু হলো পাঁচ দিনব্যাপী পাটজাত ও পণ্যের মেলা উক্ত মেলার প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জনাব মোঃ মুখতার আহমেদ (বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ) বিশেষ অতিথি জনাব জিনাত আরা(অতিরিক্ত সচিব, মহাপরিচালক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ঢাকা)
জনাব মোঃ আতাউল কিবরিয়া (ডিআইজি, পুলিশ ময়মনসিংহ রেঞ্জ, ময়মনসিংহ)
উক্ত মেলার সভাপতিত্ব করেন -জনাব মফিদুল আলম (জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ)
মেলায় ব্যাগ, শোপিস সহ পাট পণ্যের নান্দনিক উপস্থাপনার দেখা মিলেছে এ মেলায়,পাট পণ্যের আকর্ষণীয় ও আধুনিক ডিজাইন দেখতে বিভিন্ন বয়সের মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। ময়মনসিংহের পাট পণ্যের মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রায় ৩০ জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন যার মধ্যে ১২ জন নারী। মেলায় স্টল গুলোতে বিভিন্ন পণ্য মন কেড়েছে আগত দর্শনার্থীদের।
ক্রেতা দর্শনার্থীদের ভাষ্য মতে পাট পন্য হতে পারে প্লাস্টিকের বিকল্প, প্লাস্টিক পরিবেশের নানাবিধ ক্ষতি করে বিভিন্নভাবে মানুষের মানবদেহে প্রবেশ করে যা ক্যান্সার সহ আরো জটিল রোগের সৃষ্টি করে। তাই প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প এই পাট পণ্য নতুন করে আসা জাগাচ্ছে।
পণ্যের পাটজাত মোরকের বাধ্যতামূলক আইন ২০১০ :উক্ত আইনের অধীন ধান, চাল, গম,ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, আদা, ডাল, ধনিয়া, আলু, পোল্ট্রি ফিড, ফিস ফিড, ও তুষ-খুদ-কুঁড়া মুড়োকি করনে পাটের বস্তার বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ আইন ভঙ্গ করলে ০১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পঞ্চাশ(৫০) হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। একই অপরাধ পুনঃ সংগঠনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ডের বাস্তবায়নের দিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছেন কেউ কেউ।
তাছাড়া পাট আইন ২০১৭ :উক্ত আইনের অধীন পাট ও পাট পণ্যের ব্যবসা পরিচালনায় লাইসেন্স বাধ্যতামূল করা হয়েছে। লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করলে অনধিক তিন (৩)বছরের কারাদণ্ড অনধিক এক(১) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে
মাননীয় জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম মহুদয় তার বক্তব্যে বলেন -পলিথিন ও প্লাস্টিকের জন্য সারা বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে,পরিবেশ বিপর্যয় হয় নানা কারণে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে প্লাস্টিকের দাপট ও এর অতি ব্যবহার এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, মাটির উর্বরতা হ্রাস, পানি দূষণ, বায়ু দূষণ বৃদ্ধির ফলে মানব সমাজ আজ হুমকির মুখে পড়ছে। সম্প্রতি আমাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাদের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এবং এখানকার যে জীববৈচিত্র রয়েছে বিশেষ করে পানি এবং মাছের উপর যে গবেষণা করেছিলেন সেই গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন এই নদের মাছের ভেতর প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে মারাত্মক আকারে এবং বিভিন্ন উপায়ে আমাদের শরীরে মিশে যাচ্ছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এমন একটি প্রেক্ষাপটে আমরা যদি পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প পাট পণ্যকে আরো সময়োপযোগী ও সহজ লভ্য করে ব্যবহার উপযোগী করতে পারি তাহলে আমরা পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সচেষ্ট হব।