খাগড়াছড়িতে এক ঠিকাদারকে মারধর, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুব দল ও ছাত্রদল ও ২ সমন্বয়ক সহ ১৩ নেতা-কর্মী এবং অজ্ঞাত আরও ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্য মো: পারভেজ ও মোঃ রফিক নামের ২ সম্বয়কও রয়েছে। এদিকে জেলায় সন্ত্রাস,চাঁদাবাজি নিরীহ লোকজনের নামে বিএনপির মিথ্যা মামলা দায়ের প্রতিবাদে সাধারন ছাত্র জনতা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বালু মহালের ইজারার জন্য দরপত্র জমা দিতে যান ঠিকাদার কিশোর কুমার ত্রিপুরা। এ সময় ছাত্রদল ও যুবদলের একদল নেতাকর্মী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তারা কিশোরের পকেট থেকে দরপত্র ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন এবং তাকে নির্মমভাবে মারধর করেন। এ ছাড়া দরপত্র জমা না দিতে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
ঘটনার তিন দিন পর, শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করেন কিশোর কুমার। মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি মো. সবুজ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ, ছাত্রদলের সহসভাপতি সাগর নোমান, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ইব্রাহীম, সম-অধিকার খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৮৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীরা ঠিকাদারকে ঘিরে ধরে মারধর করে এবং তার কাছ থেকে নগদ টাকা ও দরপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা হুমকি দিয়ে বলে, ভবিষ্যতে ঠিকাদারি কাজ করতে হলে চাঁদা দিতে হবে।
ভুক্তভোগী ঠিকাদার কিশোর কুমার ত্রিপুরা অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তাদের কারণে সাধারণ ঠিকাদাররা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সাধারণ ছাত্রজনতা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারি কার্যালয়ের ভেতরেই হামলা চালিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত মো. ইব্রাহীম দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও দখলবাজিতে জড়িত। আর সাগর নোমান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের মেয়ের জামাই হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহবান জানান।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।