মাদারীপুরের কালকিনিতে দিন দিন সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে।এতে চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমুজুর সহ স্বল্প আয়ের মানুষেরা।
বুধবার (২ অক্টোবর) কালকিনির বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি সহ প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।সাধারন মানুষ বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকে আবার বাজার করতে এসে সামর্থ্য না থাকায় খালি ব্যাগ নিয়েই বাড়ি চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে কালকিনির ভুরঘাটা বাজার ঘুরে জানা যায়,কাঁচাবাজার আড়ৎ গুলোতে প্রতি কেজি বেগুন ১৪০ টাকা, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে, প্রতি কেজি করলা ৬৫ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা,মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা,কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা,প্রতিপিস লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে এসব সবজি খুচরা দোকান গুলোতে কেজি প্রতি আরো ১৫-২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।এতে সবজি কিনতে এসে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
সবজি বাজার করতে আসা মুন্নি নামের এক গৃহিনী জানান,”চার জনের সংসারের জন্য সবজিবাজার করতে এসেছি।করল্লা,লাউ,আলু,পালং শাক,ঢেঁড়শ কিনতেই ৫৫০ টাকা লেগে গেছে।এখন বাকি বাজার কিভাবে করবো বুঝতেছি না।কাঁচাবাজারে সবজির এতো দাম হলে আমরা কিভাবে কিনবো ?”
বাজার করতে আসা ইজিবাইক চালক শামীম বলেন,”সারাদিন ইজিবাইক চালিয়ে ৪-৫ শত টাকা পাই।এর ভিতরে মাছ-মাংস তো দূরে থাক, কাঁচাসবজি কিনতেই ৩-৪ শত টাকা লাগে।এভাবে আমরা সংসার চালাবো কিভাবে?আমাদের বাঁচাতে সরকারের বাজারের মালামালের দামের দিকে একটু নজর দেয়া উচিৎ।”
কাঁচামালের আড়ৎদার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান,”গত কয়েকদিনে বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তাই বাজারে সবজি সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি।তবে অল্প দিনের ভিতরেই শীতের সবজি বাজারে চলে আসলে দাম কমে যাবে।”
কাঁচামাল ব্যবসায়ী মোঃ সোহাগ বলেন,”সকাল ৭ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত কিছু ক্রেতা বাজারে আসলেও এরপর আর তেমন ক্রেতা থাকে না।তাই যা সবজি আড়ৎ হতে কিনে আনি তার অর্ধেকও বিক্রি করতে পারিনা।এজন্য দাম আড়ৎ হতে ১০-১৫ টাকা বেশি বিক্রি করতে হয়।”
আরেক সবজি বিক্রিতা মোঃ সোহেল বেপারী প্রায় একইভাবে জানান,”আড়ৎ হতে একটা সবজি ৫০ টাকা কেজি দরে কিনে তার সাথে আড়ৎদারী,গাড়ি ভাড়া,দোকান ভাড়া,বাজারের পরিস্কার ও নিরাপত্তা প্রহরীর টাকা এবং নিজের পারিশ্রমিক হিসাব করলে ঐ সবজিটা ৭০ টাকা বিক্রি করলেও লাভ কম হয়।তার উপর অনেক মাল পঁচে যায়।সেটাও আমাদের হিসাব করতে হয়। যদি বেঁচাকেনা ভাল হতো তবে কেজি প্রতি দুইটাকা বাড়িয়ে বিক্রি করলেও হতো।এখন বেচাকেনা নাই তাই একটু বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
সাধারণ ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা ও পৌর প্রশাসক(অতিরিক্ত দায়িত্ব) উত্তম কুমার দাশ বলেন,”ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহায়তায় প্রশাসনের বাজার মনিটরিং আরো জোরদার করা হবে এবং কোন অসাধু ব্যবসায়ী যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”