অনিশ্চয়তায় ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ছয় লেনে উন্নীতকরণ কাজ। বরিশালে ৩৩ ও মাদারীপুরে মাত্র ৭ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলেও বাকি অংশের অধিগ্রহণের কাজই এখন বাকি।অথচ পদ্মা সেতু চালুর পর মহাসড়কটিতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুদ।কিন্তু প্রশস্ত হয়নি রাস্তা। এতে যানজটের পাশাপাশি বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা।
পরিবহন শ্রমিকরা জানান,দুই লেনের এ সড়কটি ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা যাওয়ার একমাত্র মহাসড়ক। পদ্মাসেতুর সুবাদে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন আরও গুরুত্ব পাওয়ায় প্রতিনিয়তই মহাড়কটিতে বাড়ছে যানবাহন চলাচল।কথা ছিল পদ্মা সেতুর চালুর পর দ্রুত ৬ লেনে উন্নীত হবে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক। তবে সেতু চালুর দুই ২ বছর পেরিয়ে গেলেও, জমি অধিগ্রহণের অজুহাতে আটকে আছে প্রকল্পের কাজ।তাছাড়া মহাসড়কে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৈধ, অবৈধ যানবাহন চলাচল করায় যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।
এ সড়কের বাস চালক সোহরাব বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হবার পর এ রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। রাস্তাটি সরু বিধায় আমরা প্রতিনিয়ত শঙ্কা নিয়ে গাড়ি চালাই। এমন অবস্থায় আমাদের একটাই দাবি দ্রুত রাস্তাটি প্রশস্ত করা হোক।’
কালাম নামের আরেক চালক বলেন, ‘একে তো রাস্তা সরু,তার উপর মহাসড়কে দিব্যি অবৈধ যান চলাচল নিয়ে আমরা বিপদে আছি৷ দ্রুত অবৈধ যানগুলো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ৬ লেনের রাস্তার কাজ শুরু হলে ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কে দুর্ঘটনা একেবারেই কমে যাবে।’
জানা যায়,এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ২১১ কিলোমিটার ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা জাতীয় মহাড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা হয়। ২০১৮ সালে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত বরিশাল সড়ক বিভাগে ৩৩ কিলোমিটার ও মাদারীপুর অংশে মাত্র ৭ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে এতোদিনে জমির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। তাই কবে নাগাদ সড়কটি ৬ লেনে উন্নীত হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এদিকে পুলিশের পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কটি সরু হওয়ায় প্রতি মাসে গড়ে ৭ থেকে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটে।এতে হতাহত হয় অনেক মানুষ।তাছাড়া প্রতিটি স্ট্যান্ডে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ভূমি অধিগ্রহণেরে কাজ শেষ করে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।এরই মধ্যে অনেক কিছু অংশের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত বাকি অধিগ্রহণ শেষ করে সড়কটির ৬ লেনের কাজ শুরু করা হবে।
উল্লেখ্য,২০২৩ সালে বরিশাল মহানগরীর প্রবেশমুখে যানজট এড়াতে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্ত করা হয়।তখন ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪ ফুটের সড়কটি ৫৪ ফুটে প্রশস্ত করা হয়।এরপর আর কোথাও সড়কটি প্রশস্ত করা হয়নি।