ঢাকাবুধবার , ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাউফলে বেপরোয়া জেলেরা চলছে চোর-পুলিশ খেলা

মো.দুলাল হোসেন,বাউফল(পটুয়াখালী):
অক্টোবর ২৩, ২০২৪ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

২০০৫ সালে ভোলা ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর রুস্তুম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম কেন্দ্রে হিসেবে ঘোষণা করেন সরকার। প্রজনন মৌসুমে এ অভয়াশ্রমে নিরাপদে ডিম
ছাড়ার কথা থাকলেও চলছে মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব। অসাধু জেলেদের হিংস্র থাবায় অভয়াশ্রম কেন্দ্রেই অনিরাপদ হয়ে পড়েছে মা ইলিশ মাছ।
দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোব থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, কেনা-বেচা, পরিবহন ও মজুদে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছেও তা মানছেন না একদল অসাধু জেলেরা। অভিযোগ
উঠেছে, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছত্রছায়া ও প্রশাসনের অসাধু ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই অবাধে ইলিশ নিধন করেন জেলেরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা মানছেন না জেলেরা। সকাল থেকে তেঁতুলিয়াতে শত শত ডিঙ্গি নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো নদী। নদী জুড়ে ইলিশ নিধনের উৎসব চললেও প্রশাসনের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়ে না। তেঁতুলিয়া নদীর চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের বাতির খাল, চরমিয়াজান, চর রায়সাহেব, চর ব্যারেট, কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা তারের পোল, চরকালাইয়া, নুরজাহান পার্কের
রাস্তার মাথা ও বগী তুলাতলা, নাজিরপুর ইউনিয়নের কচুয়া, ধানদী, নিমদী, তাঁতেরকাঠি, কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর, ধুলিয়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া, ধুলিয়া লঞ্চঘাট, চর বাসুদেবপাশা ও কারখানা নদীর কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা পয়েন্টে অবাধে চলে ইলিশ শিকার।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মটর সাইকেলে অটোতে স্কুল ব‍্যাগ, কাপরের ব‍্যাগ ভর্তি করে মা ইলিশ পাচার করে অনেকে। চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালালে অবৈধভাবে পাচারের পথ বন্ধ হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।অভিযোগ রয়েছে, ইলিশ রক্ষা অভিযান দলের মধ্যে কিছু অসাধু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই অবাধে ইলিশ নিধন করছেন জেলেরা। ওই অসাধু ব্যক্তিরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে প্রশাসনের অভিযানে নামার খবর জেলেদের কাছে পৌঁছে দেয়। এতে জেলেরা নিরাপদ স্থানে চলে যান। প্রশাসন চলে গেলে পুনরায় নদীতে মাছ শিকারে নামেন তারা। এ যেনো জেলে ও প্রশাসনের চোর-পুলিশ খেলা। যে সব জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারে নামেন তাদের অধিকাংশই মৌসুমী জেলে বলে দাবি করেছেন প্রকৃত জেলেরা।
উপজেলার নিবন্ধিত জেলেরা জানান, যারা প্রকৃত জেলেরা তারা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেন। অবরোধের ২২ দিন তারা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকনে। কিন্তু যারা প্রকৃত জেলে না, তারা বেশি লাভের আশায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে নামেন। ইলিশ মাছ ধরার সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, কালাইয়া নৌ পুুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ একাধিক টিমে ভাগ হয়ে নদীতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে দ্রত গতির ট্রলার ও স্পিড বোট ব্যবহার করা হয়। এসব ট্রলার ও স্পিড বোটে যারা মাঝি থাকেন তারা জেলেদের কাছে থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে অভিযানের সংবাদ জেলেদের কাঁছে পৌঁছে দেন। এসব মাঝিরা অবৈধভাবে ধরা মাছ পরিবহন ও বিক্রির সাথেও জড়িত রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে মৎস্য কর্মকর্তার স্পিড বোট চালক নাননু তার বোটে করে ৫মণ ইলিশ পাচার করছিলেন। খবর পেয়ে মাছ ও স্পিড বোট জব্দ করে প্রশাসন। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা অসাধু জেলেদের নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে নামেন। এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ইলিশ রক্ষা অভিযানে থাকা টিমের কিছু অসাধু ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে নদীতে মাছ শিকার করার সুযোগ তৈরি করেন। এ সুযোগে জেলেরা অবাধে মা ইলিশ শিকার করেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ধরা মাছ বিক্রি করতে নদীর আশেপাশে
হাট বসে। অনেকটা প্রকাশ্য চলে বেচাকেনা। এ মাছ বিক্রির টাকা জেলে ও রাজনীতিক দলের নেতাদের মধ্যে ভাগবাটয়ারা হয়। বিগত মৌসুমে আওয়ামী লীগের নেতারা অবৈধভাবে মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণ করলেও
এখন বিএনপি নেতারা নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানান জেলেরা। উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানান, মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে নিয়মিত অভিযান চলছে। তবুও মাছ নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না। অভিযানের শুরু থেকেই
সচেতন করার চেষ্টা করা হলেও সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকে মাছ ধরা চেষ্টা করছেন। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু আমরা নদীতে নামলেই দূর থেকে তা লক্ষ্য করে তারা পালিয়ে যায়। মাছ ধরা বন্ধ করতে হলে পুরো নদী এলাকায় একযোগে অভিযান চালানো দরকার। তবে তার জন্য পর্যাপ্ত জনবল ও লজিস্টকি সহায়তা নেই। তারপরেও আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
ইলিশ মা রক্ষা অভিযানের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,‘ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার দায়ে এ পর্যন্ত ১৯জন জেলেকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে আটক জেলেদের সাজা দেওয়া হয়েছে।’ এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন,‘ মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে উপজেলা প্রশাসন কঠোরভাবে কাজ করছে।
যদি মৎস্য বিভাগ বা নৌ পুলিশের কোনো সদস্য বিশেষ কোনো সুবিধা নিয়ে জেলেদের কাছে অভিযানের তথ্য ফাঁস করে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।