তথ্য প্রযুক্তি বা ইন্টারনেট সেবা যেমন উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিচ্ছে দেশ ও জাতিকে, আবার সাইবার ফাঁদে নষ্ট হচ্ছে বহু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জীবন।
ইন্টারনেটে টেলিগ্রাম, ফেসবুক সহ বিভিন্ন অ্যাপসে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে একটি চক্র বিভিন্ন মানুষকে প্রতারিত করেই যাচ্ছে।
সাইবার প্রতারকদের মুল টার্গেট উঠতি বয়সী ছাত্র-ছাত্রী এবং যারা অনলাইনে পার্টটাইম কাজ করতে আগ্রহী।
চক্রটি লোভনীয় অফারে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের ব্যাংক-একাউন্ট ব্যবহার করে অবৈধ লেনদেন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারকদের টার্গেট ব্যাংক একাউন্ট গুলোর মধ্যে ১। ব্র্যাক ব্যাংক ২। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩। এক্সিম ব্যাংক অন্যতম। সাধারণ ব্যাংক একাউন্টের ক্ষেত্রে অধিক লেনদেনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর ভূমিকা আছে কি-না? সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে জনসাধারণের মাঝে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের কারণে আইনি জটিলতা সহ পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা জীবনেই দাঁড়াতে হচ্ছে আসামীর কাঠগড়ায়। ফলে ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের এবং পরিবারের বেহাল দশা। পরিবারকে একটু সহযোগিতা করতে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি আউটসোর্সিং এর জন্য ফাঁদে পড়ছে অগণিত মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত শিক্ষার্থীরা। এই ধরনের অ্যাপ গুলোর মাধ্যমে সমস্ত এক্সেস ও ব্যক্তিগত ডাটাও চলে যাচ্ছে সাইবার চক্রের হাতে। তাতে করে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছে অগণিত। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য ,
প্রতারকদের নিজস্ব ই কমার্স প্ল্যাটফর্ম /অ্যাপস এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্রেতা বা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের একাউন্টে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্যক্তি দ্বারা টাকা জমা করা হয়। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে সেই জমাকৃত টাকা চলে যায় ই-ব্যাংকিং এর মাধ্যমে চক্রটির সিলেক্টেড ব্যক্তির কাছে।
এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে প্রতারক চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
ফলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জমা কারি ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান। এবং আইনের কাছে অপরাধী হয়ে যাচ্ছে ব্যাংক একাউন্টধারী ফেঁসে যাচ্ছে
নিজেরই অজান্তেই। পড়ে যাচ্ছে আত্মসাৎ/ প্রতারণার মামলায়। পরিত্রাণের জন্য ছুটছে আইন/পুলিশ ও সাইবার ট্রাইব্যুনালের দুয়ারে।কিন্তু সুফল কি মিলবে? প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের ১। শেলী আক্তার (২৬) ২। আদ্রিতা সেফা (২০) ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটি বিজ্ঞাপন পেয়ে কথিত ইয়েলো কোম্পানির একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম-এ মোবাইলের মাধ্যমে অক্টোবর ২০২৪ ইং শুরুতে আবেদন ফরম পূরণ করি। যেখানে বলা হয়, কোম্পানির গ্রাহক সেবায় ই-কমার্স প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের দেশি-বিদেশি পণ্য ক্রয়/বিক্রয় করা হয় তাদের ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে।
তাই আবেদনটি পূরণ করতে গিয়ে আমরা আমাদের বায়োডাটা ও ব্যাংক একাউন্ট ওই কোম্পানিকে অ্যাক্সেস দিতে হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক দিনের মাথায় ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে কোম্পানি গ্রাহকের লক্ষাধিক অর্থ লেনদেন করায় আমাদের একাউন্টে। তাই বিষয়টি আইন পরিপন্থী কিনা? সন্দেহ হলে আমরা উক্ত কোম্পানির সাথে কথোপকথনের সমস্ত স্ক্রিন রেকর্ড ধারণ করে রাখি এবং ব্যাংকের একাউন্ট সহ ওই কোম্পানির সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেই। তারপর থেকে তো হুমকি-ধমকি লেগেই আছে।
গত ৭ও ৮ই অক্টোবর জানতে পারি খুলনা বিভাগ হতে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও আত্মসাতের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বর্তমানে আমাদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এখন আমরা হেয়-প্রতিপন্ন। আইনের চোখে অপরাধী। না-জানা আমাদের মত কত শিক্ষার্থী এই সাইবার ফাঁদে পড়ে জীবন বিপন্ন।
উক্ত বিষয়ে সাইবার টিম নাইন এপিবিএন চট্টগ্রামের সাথে কথা বললে, তারা বলেন সাইবার টিম/এপিবিএন সবসময় সাইবার ফাঁদ এড়াতে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম ও প্রচার-প্রচারণা করেই যাচ্ছে। জনসাধারণের পাশে থেকে সংস্থাটি সাইবার নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। যে কোন সাইবার সংক্রান্ত বিষয়ে সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিযয়াতেও প্রচার করে থাকে। যেন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ সচেতন হতে পারে। ভিকটিমদের এই জাতীয় সেবা নিশ্চিত করতে এবিবিএন সদা প্রস্তুত।
সম্পাদক ও প্রকাশক : আল মামুন, নির্বাহী সম্পাদক : ফোরকানুল হক (সাকিব), ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : সোহাগ আরেফীন,
প্রধান কার্যালয় : ৯২, আরামবাগ ক্লাব মার্কেট, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত