কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাওয়না টাকা ও রাস্তা নিয়ে দুই বাড়ির মধ্যে গত এক বছরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। তাদের এ দ্বন্দ্বে ফেঁসে গেছে কয়েকটি সাধারণ পরিবার। সংঘর্ষে এসব পরিবারের কারোর ভেঙেছে বাড়িঘর, লুট হয়েছে টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-অলংকার,নিয়ে গেছে গরু-ছাগল। আগুন দিয়েছে গরুর খামারে।
ঘটনাটি ঘটে দেবিদ্বার উপজেলার বকরিকান্দি গ্রামে। শুক্রবার(২০ ডিসেম্বর) সকালে কথা হয় গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সাথে। তাদের দাবি, এ গ্রামের কাউসার ও তার ভাই মমিনের সাথে টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলছে আব্দুল কাদেরের। কয়েকদিন পরপর বাদে সংঘর্ষ। এরি জেরে পরবর্তীতে রাস্তা নিয়েও দ্বন্দ্ব বাধে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে কথা কাটাকাটির জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় কাদেরের লোকজন কাউছার ও মমিনের লোকজনদের বাড়িঘরে ভাঙ্গচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনে।
মনি বেগমকে ভাঙ্গাচুরা বসতিঘরের সামনে বসে অঝোরে বিলাপ করতে দেখা গেছে।তার মাথাগোঁজার শেষ সম্বলটুকু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন সংঘর্ষকারীরা। তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, বুধবার আমি আমার বাপের বাড়িতে গেছিলাম পর দিন সকালে খবর পাই, আমার ঘর ও আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে। আমার কি অপরাধ। আমার ঘরের লোকজন তো কেউই এই দ্বন্দ্বে নাই।
একই ঘটনা ঘটেছে কবির হোসেনের বাড়িতে। দেখা যায়, কবিরের স্ত্রী আকলিমা বেগম ভাঙাচোরা ঘরটিকে মেরামতের চেষ্টা করছেন। এসময় তিনি বলেন, আমার ঘর ভাঙচুর করে আলমারি ড্রয়ের থেকে দুটি কানের দুল ও দুটি চেন চার ভরি স্বর্ণ নিয়ে গেছে কাদেরের লোকজন। কারেন্টের তার কেটে নিয়েছে তারা।
এছাড়াও আবু তাহেরের ২ গরু ও নগদ কিছু টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। ফরিদা বেগমের বিল্ডিং'র জানালার কাঁচ ভেঙে দিয়েছে একই বাড়ির লোকজন। এসব লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছে অন্তত বিশ জন অস্ত্রধারী যুবক। এ সময় আতঙ্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন তারা।
ভুক্তভোগী ফরিদা বেগমে বলেন, আমার ছেলেরা মমিনু ও কাউসার কাছে কাজ করেছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কাদের কাউসারের দ্বন্দ্ব হয়েছে ওদের তো কোন দোষ নাই। আমরা কাদেরের পক্ষে কথা না বলায় এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে আবদুল কাদের বাড়িতে গিয়ে ও তোর মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি। মমিন মিয়া বলেন, আব্দুল কাদের ও তার লোকজন দেবিদ্বারের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের অনুসারী ছিলেন। কালাম উপজেলা চেয়ারম্যান থাকার সময় থেকেই আমাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তারা। হত্যার দায়ে এমপি কালাম পালিয়ে গেলেও তার দোসর কাদের ও তার লোকজন এখনো রয়ে গেছে।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মো. ইলিয়াস বলেন, সংঘর্ষে সংবাদ পেয়ে সেনাবাহীনি এবং পুলিশ টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এখনো পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নিব।
সম্পাদক ও প্রকাশক : আল মামুন, নির্বাহী সম্পাদক : ফোরকানুল হক (সাকিব), ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : সোহাগ আরেফীন,
প্রধান কার্যালয় : ৯২, আরামবাগ ক্লাব মার্কেট, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত