ঝিনাইদহের জেলার শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের ভান্ডারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ১০০ টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে স্কুলে টাকা দিয়েই ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন।

অভিযোগ উঠেছে, ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুর রহমান এ সিস্টেম চালু করেছেন।

এতে অনেক হতদরিদ্র, অসহায় দুস্থ গরিব মানুষ তাদের সন্তানদের সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করার আগ্রহ হারাচ্ছেন। বুধবার সকালে সরেজমিন ভান্ডারি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

বাগুটিয়া গ্রামের মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ নীলচাদ সাগর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।

স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে (নামে প্রকাশ না করার শর্তে) জানা যায়, সরকারি প্রাইমারি স্কুলে সব শিশু শিক্ষার্থীকে স্কুলগামী করতে প্রাইমারি স্কুলমুখী করতে সরকার শিশু ক্লাসে ফ্রি শিক্ষা দানের নিয়ম করেছেন। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভান্ডারি পাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু ক্লাসে ভর্তির জন্য অভিভাবকদের কাছ থেকে ১০০ টাকা হারে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা কিনা সরকারি নিয়মবহির্ভূত।

এবিষয়ে স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা বলেন,আমরা প্রধান শিক্ষক আসাদুর রহমান স্যারকে শিশু শ্রেণীতে টাকা নিয়ে ভর্তি করতে নিষেধ করলেও তিনি না শুনে টাকা নিয়ে ভর্তি শুরু করেন।আমরা কোন ভাবেই ভর্তি হতে টাকা নিতে ইচ্ছুক না। আমরা এর প্রতিকার চাই।

অভিযোগ স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুর রহমান বলেন, ‘খুশি হয়ে অভিভাবক তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দিচ্ছেন, এটা দোষের না! সরকারি স্কুলে ভর্তি করতে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম আছে কি না? জানতে চাইলে তিনি জানান, টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই! তবে কেন নেওয়া হচ্ছে? সংবাদ না করার শর্তে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, আর কোনো টাকা নেওয়া হবে না।প্রধান শিক্ষক এবিষয়ে সংবাদ প্রচার না করার জন্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

শিক্ষার্থী তানভীরের অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক নির্দেশ দিয়েছেন, তার নির্দেশে শিশু শিক্ষার্থী ভর্তি করতে টাকা লাগছে। কিন্তু টাকা নেওয়ার কোনোই নিয়ম নেই।

শৈলকুপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষ অফিসার সিদ্দিকুর রহমান জানান, সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ৪ বছরের বেশি শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে শিশু শ্রেণিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেখানে টাকা নিয়ে ভর্তি নেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। এ ধরনের অভিযোগ কারও বিরুদ্ধে পেলে সরাসরি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে।

এবিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস বলেন,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ভর্তির জন্য কোন টাকা নেওয়ার নির্দেশনা নেই। তবে কোন সরকারি স্কুলের শিক্ষক বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।