শহীদ মনিরের নামে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রামেক) একটি হল করাসহ তার পরিবারকে সরকারি চাকরি ও পুনর্বাসন করার দাবিতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারী) সকাল দশটায় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ গেইটের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজের সভাপতিত্বে ও পৌর সভাপতি মো. পারভেজ মোশারফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)’র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলার উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন, পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, অপার সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামে যখনই বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা বিস্তারের কর্মসূচি হাতে নেয় ঠিক তখনই জেএসএস নামধারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এই বাঁধা শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রে নয় বরং সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সামাজিক অগ্রগতিসহ সকল ক্ষেত্রেই বাঁধা দেয় এই উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনটি।
বক্তারা আরো বলেন, একই সময়ে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ও জেএসএস (সন্তু) সন্ত্রাসীরা বাঁধা সৃষ্টি করেছিলো। সেসময়ে তারা তাদের ছাত্র সংগঠন পিসিপিকে লেলিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে শিক্ষার্থীদের হুমকিও দিয়েছিলো। পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ কে আধুনিকতা ও শিক্ষার আলো থেকে দূরে রাখতে চায় তারা। এই গোষ্ঠিটি তাদের দমিয়ে রেখে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করে ত্রাস সৃষ্টির করে যাচ্ছে। শিক্ষা বিস্তারে ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাঁধা প্রদান করে আসছে পাহাড়ের এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি।
অবিলম্বে শহীদ মনির হোসনের নামে মেডিকেল কলেজের একটি হলের নামকরণ এবং তার পরিবারকে পুনর্বাসন করতে দাবি জানানো হয়। একই দিন জেএসএস সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরতর আহত জামাল হোসেন কে ক্ষতিপূরণ এবং অবিলম্বে মেডিকেল কলেজ এর স্থায়ী ক্যাম্পাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার ও দাবি জানায় বক্তারা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে হুশিয়ারী ও দেয় পিসিসিপি।
উল্লেখ্য, ২০১৫সালের ১০ জানুয়ারী রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ চালু হওয়ার আনন্দ শোভাযাত্রায় পার্বত্য চট্টগ্রামের উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস এর ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর সন্ত্রাসী হামলায় নির্মমভাবে খুন হয় মনির হোসেন। তার আত্মত্যাগের বিনিময়ে রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ১০বছরেও সে হত্যার বিচার হয়নি। তার সে অবদানের কথা আজ কারো মনে নেই। মনিরের পরিবার কে দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা। মনিরের সেই অবদানকে স্মরনীয় করে রাখতে মেডিকেল কলেজের একটি হল ‘শহীদ মনির হল’ নামে নামকরণ করাসহ তার পরিবারকে সরকারি চাকরি দেওয়া ও পুনর্বাসন করার দাবি জানিয়ে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ।
