নিজের মেধা,অধ্যবসায় ও ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একজন ঝালাই মিস্ত্রির কন্যার মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ মিলেছে।মেয়ের মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ মেলায় পরিবারে আনন্দ ছড়িয়ে পড়লেও দারিদ্রতার কারণে মেয়ের লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সমস্ত পরিবার।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের শ্যামল চন্দ্র বর্মন পেশায় একজন দিনমজুর।জীবিকার তাগিদে ঝালাইয়ের দোকানে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন।তার কোন ছেলে সন্তান নেই।৩ জনই মেয়ে।বড় মেয়ে নার্সিং ইন্সটিটিউটে পড়াশোনা করছে।২য় মেয়ে শ্রাবনী রানী রায় এবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ।মেধা তালিকায় তার স্থান ৮৫৬। ১৯ জানুয়ারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির রেজাল্ট প্রকাশিত হলে শ্রাবনী রানীর ভর্তিও সুযোগ মিলে।
দিনমজুর শ্যামল চন্দ্রের কোন জমি জমা না থাকায় এবং হাতের আয়ে সংসার পরিচালনা করায় দরিদ্র পিতার মনে আনন্দের পাশাপাশি দু:শ্চিন্তায় পড়েছে ।কন্যা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার সংবাদে ঢোলারহাট এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ এলাকাবাসী সবাই আনন্দিত।কিন্তু দরিদ্র শ্যামল চন্দ্র তার মেয়েকে কিভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাবে এবং ৫ বছর কিভাবে লেখাপড় চালাবে এই চিন্তায় বাবা-মা চরম দু:চিন্তায় পড়েছেন।
মেধাবী শিক্ষার্থী শ্রাবনী রানী জানান, ছোটবেলা থেকে আমার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হওয়ার।সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য এবং স্কুল কলেজের শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমি এবার রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, মেডিকেলে ভর্তির জন্য খাওয়া গোসল ছাড়া বাকি সময় আমি পড়াশোনার মধ্যে ছিলাম।এ সময় খারাপ কোন কিছুর দিকে মনযোগ দেয়নি।
বাবা শ্যামল চন্দ্র বর্মন ও মা উভয়ে কন্যার এই অসামান্য অর্জনে অত্যন্ত খুশি ।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, এবার ঠাকুরগাঁও জেলা যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুয়োগ পেয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই।মেধাবী ও দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রচুর স্কোপ রয়েছে।আমি এখানে যোগদান করার পর প্রচুর দরিদ্র শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করেছি।যে মেয়েটি মেডিকেলে চান্স পেয়েছে সে যেন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে আমি সর্বান্তকরণে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করছি।