ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় এক গৃহবধূকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে।
ঠাকুরগাঁও রোডের ছিটচিলারং এলাকায় রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই গৃহবধূর নাম সুমাইয়া আক্তার (২২), যিনি ছিটচিলারং এলাকার শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী। আজ (সোমবার) তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
গৃহবধূর বাবা এজাবুল হক বলেন, ‘আমার মেয়েকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর তাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যেন এ হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালানো যায়।
‘আমাকে ছেলের পরিবার থেকে এ ঘটনায় বাড়াবাড়ি না করার জন্য চাপ দিচ্ছে এবং মীমাংসা করতে বলছে। কিন্তু আমি বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন বছর আগে আমার মেয়ের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও রোড এলাকার সেলিম ভাঙ্গারির ছেলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তাদের কোন যৌতুকের দাবি ছিল না, কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমার নাতি হওয়ার পর থেকে কয়েকবার তারা যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে।
মেয়ে পাশবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমাকে বারবার অভিযোগ করেছে। আমি কয়েক দফায় টাকা দিয়ে মীমাংসা করেছি।
এজাবুল আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে মেয়ের শাশুড়ি আমাকে ফোন করে বলে, জামাই আমার মেয়েকে মেরেছে এবং আমার মেয়ে ফাঁসি দিতে গেছে। আমি তখন মেয়েকে ফোনে চাই। কিন্তু তারা কথা বলতে দেয়নি।
‘ওরা আমার মেয়েকে গোসল করা অবস্থায় পানিতে চুবিয়ে মেরেছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রকিবুল আলম বলেন, ‘সুমাইয়া আক্তারকে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তার সাথে স্বজন যারা এসেছিল, তারা বলেছিল তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তিনি অনেক আগেই মারা গেছেন।’
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলেন, ‘(রবিবার) রাত ১১টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং মেঝেতে শোয়া অবস্থায় এ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা মরদেহের সুরতহাল করেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ আছে।
‘এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
কাউকে আটক করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘ছেলের পরিবারের সবাই পলাতক। তাদের ধরতে কাজ করছে পুলিশ।’