হিন্দু পঞ্জিকার বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় পুণ্যলাভের আশায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে শতশত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সমুদ্রস্নান করেছে। আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রম এর অক্ষয় তৃতীয়াব্রতম এ সনাতন ধর্ম সম্মেলনের আয়োজন করেন। বুধবার (৩০ এপ্রিল)
ভোর ৫ টা থেকে আহ্বানী, সমবেত প্রার্থনা, মঙ্গলঘাট স্থাপন, শ্রী শ্রী বিষ্ণ পূজা,গঙ্গা মায়ের পূজা শেষে সকাল ১১ টায় সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গঙ্গাস্নানে মিলিত হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এটি হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি। এই শুভদিনে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নিয়েছিলেন, এ জন্য এই দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালন করা হয়।
সাংবাদিক রতন কুমার দাস এর সঞ্চালনায় আয়োজিত ধর্ম সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীগুরু প্রাণপুরুষ শ্রীশ্রী জয়দেব ঠাকুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঠাকুরের সহধর্মিণী জগৎমাতা হরপ্রিয়া দেবী ও পরমপূজ্যপাদ ঋত্বিক মহারাজ ডা. রাধাস্বামী।
সভায় ধর্মীয় বিষয় আলোকপাত করেন কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিহার রঞ্জন, (HISCOHER) ভক্ত প্রভাষক শ্রী সঞ্জয় মন্ডল, ভক্ত শ্রী মাষ্টার শ্যামল চন্দ্র মালো, মাস্টার গোবিন্দ কুমার দেবনাথ, অধ্যাপক সঞ্জয় মন্ডল, বাসুদেব রায় সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত জয়দেব ভক্তবৃন্দ।
প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে সানাতন ধর্মাবলম্বীরা গঙ্গাস্নানে আসেন। এ সময় হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখরিত হয় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এ সময় সৈকতে দেখা যায় অনেকেই স্নান শেষে পরিবার নিয়ে গীতা পাঠ করছেন, আবার কেউ প্রার্থনা সহ ধর্মীয় রীতি-নীতি মগ্ন হয়েছেন।
ঢাকা থেকে আগত কনিকা রায় বলেন, এই দিন গঙ্গাস্নান করলে অক্ষয় পুণ্য অর্জন করা যায়। এই তিথিতে স্বয়ং নারায়ণের বাস থাকে গঙ্গায়। তাই যদি এই তিথিতে গঙ্গায় স্নান করা হয় তাহলে জীবন থেকে দুঃখ, রোগব্যাধি একেবারে মুছে যায় এবং জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে।
কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিহার রঞ্জন বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় আজকেও এই অক্ষয় তৃতীয়ার অনুষ্ঠানটি যাথাযথ্য মর্যাদায় আমরা পালন করছি। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সার্বিক সহায়তা আমরা পাচ্ছি।
মহিপুর থানার ওসি (তদন্ত) অনিমেষ হালদার বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভীর বেড়েছে, তাই আমরা বাড়তি নজরদারি রেখেছি। নিরাপত্তা জোরদারে আমাদের সদস্যরা কাজ করছে। ###