পুরো নাম কামাল পারভেজ, আমি যতটুকু জানতে পেরেছি ৯৭ কিংবা ৯৮ সাল থেকেই লেখালেখি জগতে প্রবেশ করেছেন, ছাত্র জীবন থেকে নাকী প্রতিবাদী কবিতার লেখনিতে অবিচল। ২০১৮ সালে দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পারভেজ ভাইয়ের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। ছোট ভাই ও বড় ভাইয়ের মতো। এই চট্টগ্রামে আমার সাংবাদিকতার অবিভাবক হিসেবে যাকে ভাবি সেটা হলো কামাল পারভেজ ভাই। কিন্তু ওনার সাথে পরিচয় এবং সু-সম্পর্ক গড়ে উঠার পরও আমাকে ভাবায় আসলে ওনি কোন পন্হী। আওয়ামী সরকারের সময় ২০২১ সালে ওনার ২টি কবিতার বই প্রকাশিত হয় “হায়রে বাংলাদেশ” ও “স্বাধীনতার খোঁজে”। এই দুইটি কবিতার বই ছিলো সরকার বিরোধী প্রতিবাদী কবিতা। তখনই ভয়ে ছিলাম কখন যেনো মামলা হামলা হুলিয়া তৈরি হয়ে জেলে যায় নয়তো আয়নার ঘরে জীবন কাটাতে হয়। ঐ মূহুর্তে তিনি একটু চাপে পড়ে যান।
বই প্রকাশকরাও অনেকটা ভয়ে ভয়ে ছিলো। কবিতার বইগুলো একরকম নিষেধাজ্ঞার মতো হয়ে। তখন ভেবেছিলাম ওনি বিএনপি পন্হী। তবে পারভেজ ভাই চাপে পড়লেও কারো কাছে মাথা নথ করতে দেখিনি,, নিজের সমস্যা নিজেই ট্যাক্যাল দিয়েছেন। বন্ধ করেননি লেখালেখি ও কবিতা লেখা। ২০২৩ সালে ” দহকালের ক্ষরণ” প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে পুরো সরকার বিরোধী আরও একটি প্রতিবাদী কবিতা “হাতকড়া” নামক কবিতা বইটি প্রকাশিত হলে অনেকটা সরকারের চাপে পড়ে যায়। পারভেজ ভাই অবশ্য কম কথার মানুষ গভীর জলের মাছ বললে ভুল হবে না, কথা কম বললেও সোশ্যাল মিডিয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রমাণ করে ওনি একজন কট্টর অন্যায়ের প্রতিবাদী। ওনার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আমার মতো অনেকে কমেন্ট করতে ভয়ও পায় এবং চিন্তাও করে । কোনো টকশোতে বসালে বুঝা যায় প্রতিবাদের ভাষা কিভাবে তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। আওয়ামী সরকারের আমলে ওনার প্রতিবাদী লেখালেখির কারণে আমার মনে হয়েছিল কখনো পটপরিবর্তন হলে কামাল পারভেজ ভাই ভালো একটা জায়গায় অবস্থান করবেন। সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেখতে পাবো। কিন্তু না আমি এবং আমরা যারা কামাল ভাইকে পছন্দ করি সত্যি হতাশ। তবে আবারও নতুন করে ভাবতে শুরু করলাম পারভেজ ভাইকে নিয়ে কারণ ইদানিং ওনার ফেসবুক স্ট্যাটাসে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনা ও সমালোচনা দুটোই করছেন এবং গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কিছু নেতাদের অযাচিত অশোভন বক্তব্যের করা সমালোচনা করেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও বিএনপি কর্মীদের উশৃঙ্খল অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয় নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন। উনি কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না। তাহলে কি ধরে নিতে পারি পারভেজ ভাই একজন বামপন্থী বিএনপি। আসলে এসব সত্যবাদী ও সৎসাহসিক লোকগুলোর সবসময় কপাল পুড়া থাকে। পটপরিবর্তনের পর যখন কিছুই হলোনা ভবিষ্যতে আর কিছু হবে কি-না ভাববার বিষয়। আর আমিও ভাবতে থাকি কামাল পারভেজ ভাই আসলেই কোনপন্হী।।
লেখক – সোহাগ আরেফিন
গণমাধ্যম কর্মী।
