স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক কালের প্রতিচ্ছবি, খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি অবৈধভাবে বন উজাড়ের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাবুরাম ফরেস্টারের নেতৃত্বে রামগড়, জালিয়াপাড়া, মানিকছড়ি ও কড়ালহাট এলাকা জুড়ে ফলজ ও বনজ গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলার অভিযোগ করেছে স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা।
শীত মৌসুমকে সামনে রেখে বিভিন্ন ব্রিকফিল্ডে জ্বালানি কাঠ সরবরাহের নামে বন ধ্বংসের এই কার্যক্রম চলছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুট পারমিটের নাম ব্যবহার করে পাহাড়ি বন থেকে সেগুনসহ মূল্যবান গাছ কেটে ব্রিকফিল্ডে সরবরাহ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু বন কর্মকর্তার সহযোগিতায় এই অবৈধ বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে।
একসময় খাগড়াছড়ির আলুটিলা ফরেস্টে কর্মরত ফরেস্টার বাবুরামকে স্থানীয়রা ‘বনখেকোদের রাজা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার মেয়াদকালে বিপুল পরিমাণ বনজ সম্পদ লোপাট হয়ে যায় এবং অবৈধ উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন তিনি। পরবর্তীতে তার বদলি হলেও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটিতেও তিনি প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রেখেছেন।
অন্যদিকে কড়ালহাট রেঞ্জ এলাকায়ও সেগুনবাগান ধ্বংসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের প্রতিবেদক রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এলাকায় ঘুরে দেখেছেন, আলুটিলার সেগুনবাগানের বহু মূল্যবান গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কাঠ মাটিরাঙার কিছু ফার্নিচার ব্যবসায়ীর মাধ্যমে পাচার হচ্ছে।
মাটিরাঙা রেঞ্জ কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, “আমরা সবসময় সতর্ক অবস্থায় আছি। আলুটিলা ফরেস্টের দায়িত্ব খাগড়াছড়ি অফিসের অধীনে। ব্রিকফিল্ডের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তৃত্ব রয়েছে।” তিনি আরও জানান, অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ বছর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস দেন।
তবে গোপন সূত্রে জানা গেছে, মাটিরাঙা অঞ্চলের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতার সহযোগিতায় ব্রিকফিল্ডগুলোতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এমনকি, এ বিষয়ে কথা বললে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ কড়াতকল ও ইটভাটা বন্ধ করে বন ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে খুব শিগগিরই পাহাড় হারাবে তার সবুজ সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য।