আলুটিলার সেগুনবাগান ধ্বংসের মূল ঘাঁটি মাটিরাঙা ডিপো
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | ১২ নভেম্বর ২০২৫
খাগড়াছড়ির ঐতিহাসিক আলুটিলা সেগুনবাগান ধ্বংসের মূল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মাটিরাঙা ডিপো—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে। স্থানীয়রা জানান, আলুটিলা থেকে মাটিরাঙা পর্যন্ত সহজ যোগাযোগপথ হওয়ায় প্রাচীন সেগুন গাছ কেটে এনে সেখানে বিভিন্ন স্থানে জমা রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে এসব কাঠ জুট পারমিটের মাধ্যমে বৈধতা দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, এই কর্মকাণ্ডে কিছু বন কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী মহল জড়িত রয়েছেন। এতে সরকারি বনভূমি উজাড় হয়ে যাচ্ছে এবং রাষ্ট্র হারাচ্ছে রাজস্ব।
খাগড়াছড়ির আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা বাবুরাম ফরেস্টার—যিনি একসময় আলুটিলা অঞ্চলে কাঠ পাচারের অভিযোগে বিতর্কিত ছিলেন—তার সময়কার নেটওয়ার্ক এখনো সক্রিয় রয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। তাদের ভাষায়, “বাবুরাম ফরেস্টার যা করে গেছেন, অন্যান্য কর্মকর্তারা সেই দিকেই ধাবিত হচ্ছেন।”
একজন পরিবেশকর্মী বলেন, “বনের গাছ কাটার কাজে বাগানের মালিদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে, অথচ তাদের কাজ হওয়া উচিত গাছ রক্ষণাবেক্ষণ।”
এই বিষয়ে বারবার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবগত করলেও তিনি প্রতিবারই বিষয়টি এড়িয়ে যান—এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কয়েকজন। তবে সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসাইন বলেন, “আমরা এই বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।”
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জানান, “কর্তৃপক্ষ যদি এত তৎপর থাকে, তবে প্রতিদিন ট্রাকভর্তি কাঠ কীভাবে বাইরে যাচ্ছে?”
পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, আলুটিলা বন রক্ষায় অবৈধ জুট পারমিট কার্যক্রম বন্ধ করা এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা জরুরি। তারা বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মাটিরাঙা এলাকায় বেশ কয়েক দফা কাঠ জব্দ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা দাবি করছেন, অভিযান চললেও মূল নেটওয়ার্ক এখনো সক্রিয় রয়েছে।
আলুটিলা বন ধ্বংসের এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটির পরবর্তী পর্বে সেগুন কাঠ কাটার ভিডিও ও চিত্রসহ বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে ‘কালের প্রতিচ্ছবি’ ইউটিউব চ্যানেলে।
সত্যের সন্ধান চলবে...