খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি || ১২ নভেম্বর ২০২৫
মাটিরাঙা বন বিভাগের একাংশ কর্মকর্তার সহযোগিতায় কোটি কোটি টাকার কাঠ পাচার চলছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও কাঠ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বন রক্ষাকারীরা নিজেরাই যেনো ‘বনখেকো’তে পরিণত হয়েছেন। জুট পারমিটের কাগজ দেখিয়ে মাটিরাঙার বিভিন্ন স্থানে ডিপো তৈরি করে সেগুন, আকাশি, মেহগনি ও বিভিন্ন ফলজ গাছ পাচারের পথ সুগম করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নয়াপাড়া, শান্তিপুর, মাটিরাঙা রসুলপুর এবং তাইন্নং এলাকায় গড়ে ওঠা এসব ডিপোতে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঠ সংগ্রহ করে জুট পারমিটের বৈধতা দেখিয়ে পাচার করা হয়।
একজন কাঠ ব্যবসায়ী বলেন,
“জুট পারমিট আসলে লোক দেখানো কাগজ। একটি বাগান দেখিয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে কাঠ সংগ্রহ করা হয়; সবটাই চলে কর্মকর্তাদের সহযোগিতায়।”
অভিযোগ রয়েছে, বাগান মালিদেরও অফিসের আদায়কর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যাদের মূল দায়িত্ব বাগান রক্ষণাবেক্ষণ—এখন তারা নাকি অবৈধ আদায় ও লেনদেনের কাজে যুক্ত।
কাঠ ব্যবসায়ী পেয়ার মোহাম্মদ দাবি করেন,
“মাটিরাঙ্গা রেঞ্জে একটি জুট পারমিট করতে কয়েক লাখ টাকা লেনদেন হয়। টাকা ছাড়া ওপেন ডিপো চালানোই সম্ভব নয়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগ নিষিদ্ধ মৌসুমেও বাঁশ কাটার অনুমতি দিচ্ছে। তাদের ভাষ্য—বাঁশ কাটার মৌসুম না হলেও এখন বনে নির্বিচারে বাঁশ কাটছে একটি চক্র।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম মোশারফ হোসাইনকে অভিযোগ জানালে তিনি বলেন,
“ওই রেঞ্জের দায়িত্বে আছেন দিপু। আমরা বিষয়টি তদন্ত করব এবং বন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাঁশ কাটার বিষয়ে তিনি জানান, “বাঁশ কাটা বৈধ।”
অন্যদিকে একদল সাংবাদিক অভিযোগ করেন, মাটিরাঙা রেঞ্জের কিছু কর্মকর্তা তাদের ফোন রিসিভ না করে উল্টো অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছেন।
স্থানীয় পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা—
“এভাবে বন উজাড় চলতে থাকলে অচিরেই মাটিরাঙার প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হবে, হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য।”
তারা দ্রুত তদন্ত, অবৈধ ডিপো বন্ধ এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন