খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ও গুইমারা উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় জুট পারমিটের আড়ালে অবৈধভাবে সেগুনবাগান কাটা এবং বাণিজ্যিক কাঠ সংগ্রহ চলছে—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পরিবেশকর্মী, সচেতন নাগরিক এবং গোপন সূত্রের বরাতে।
অভিযোগকারীরা জানান, জুট পারমিটকে বৈধতার কাগজ হিসেবে ব্যবহার করে পাহাড়ি এলাকার মূল্যবান গাছ নিয়মিত কেটে পাচার করা হচ্ছে, যার ফলে দ্রুতগতিতে ধ্বংস হচ্ছে পাহাড়ের বনবৈচিত্র্য। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে গুইমারার আল-মদিনা ব্রিকফিল্ডের মালিক তারেক সওদাগরের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে, তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর গুইমারা এলাকার একজন শক্তিশালী নেতা এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলে তিনি কাউকে ছাড় দেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাসহ সব সময়ই তিনি প্রভাব বজায় রেখে ইটভাটা পরিচালনা ও কাঠ ব্যবসা করে আসছেন এবং বর্তমানে তার ক্ষমতা আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পরেও বন ধ্বংসের এসব কার্যক্রম থামেনি বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
তারা জানান, ভূমিকম্পের কারণে পাহাড় দুর্বল হয়ে পড়লেও রাতের আঁধারে নিয়মিত গাছ কাটা হচ্ছে, যা যে কোনো সময় ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
এ বিষয়ে মানিকছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার এলাকায় কোনো ইটভাটা নেই এবং অবৈধভাবে গাছ কাটার সুযোগও নেই; এমন কিছু ঘটলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশবাদীরা অভিযোগ করেছেন, শুধুমাত্র সংবাদ প্রকাশ বা সাময়িক অভিযান দিয়ে এসব কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়; বরং স্বচ্ছ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
স্থানীয় পরিবেশ সংগঠন ও এনজিওগুলোও ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সবশেষে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই সংবাদটি অনুসন্ধানধর্মী হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে, এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগসমূহের সত্যতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এগুলোকে ‘অভিযোগ’ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া গেলে তা সংবাদে হালনাগাদ করা হবে।