শিবলী সাদিক খানঃ
ময়মনসিংহে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সকল ইউনিয়ন গুলোর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের সরকারের কর্মসূচির টিআর, কাবিখা কাবিটা, সংস্কার কর্মসূচির চাল, গম বরাদ্দকৃত মালামালের সর্বসাকুল্যে অনুমান চার কোটি টাকা গ্রামীণ জনপদ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন মেরামত কাজের জন্য ১১টি ইউনিয়নে ১৮৩টি প্রকল্পের নামের তালিকা প্রণয়ন করা হয়। যাচাই করতে দুদিনের সময় চাওয়া এবং স্বাক্ষরের কথা বলায় মতবিরোধ তৈরী হয়। প্রকল্প গুলোতে ত্রুটি বিচ্যুতি চিহ্নিত করার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সানজিদা রহমান এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য সচিব রেজাউল করিম এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকা অনুমোদনে নিয়ম ও অনিয়মের প্রশ্নে মতবিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। যা জেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়িয়েছে। মতবিরোধে অফিসিয়াল দায়িত্বশীল আলোচনা প্রকল্প যাচাইয়ের কথা বলায় নাজেহাল হয়েছেন পিআইও এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা যায়, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় জড়িত থাকায় সকল চেয়ারম্যান ইউএনও’র পক্ষ নিয়েছেন। অন্য দিকে প্রকল্প যাচাই করলে তালিকা অনুমোদনে বিলম্বিত হতে পারে কারণ ভূয়া অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান বা গত বছরের একই স্থানে ভিন্ন নাম উল্লেখ করে প্রকল্প গ্রহণ, প্রয়োজনের চেয়েও অধিক বরাদ্দ, সহ নানা অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করার জন্যই ১১টি ইউনিয়নের ভালো মন্দ মিলিয়ে চেয়ারম্যানদের ঐক্যমত্যের সংবাদ সম্মেলন এর নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। আগামী সুবিধা আদায়ের কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে ঈশ্বরগঞ্জেের অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প নামের সর্বমোট ১৮৩ টি তালিকার মধ্যে চেয়ারম্যানদের দেওয়া ৮০ শতাংশ এবং ইউএনও কর্তৃক ২০ শতাংশ তালিকা তিনি নিজে শুক্রবার পিআইও অফিসে উপস্থিত হয়ে তার অফিসের নাজির মাজাহার করিম এর মাধ্যমে এ তালিকা প্রস্তুত প্রণয়ন করান অনুমোদনের জন্য একক ভাবে স্বাক্ষর প্রদান করেন এবং পিআইও কে স্বাক্ষর দিতে বলেন। এ বিষয়েকোন সভা বা আলোচনা না করেই প্রকল্প গুলো যাচাই বাছাই ছাড়াই অনুমোদনের জন্য পিআইও স্বাক্ষর দিতে আপারগতা প্রকাশ করে দুদিনের জন্য সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গ ক্রমে প্রশ্ন ছিল কালবিলম্ব সহ্য করতে না পারায় আপনি চেয়ারম্যানদের ব্যবহার করেছেন আলোচনায় উঠে এসেছে। এ বিষয়ে উত্তরে বলেন, কাউকে ব্যবহার করিনি, “আমি ট্রেনিং এ চলে যাবো বলে, আগেই তালিকায় স্বাক্ষর করেছি”। উপজেলার প্রশাসক হিসাবে যোগদানের পর থেকে আমি সততা স্বচ্ছতার সাথে কাজ করছি।
পিআইও নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রকল্পের কাজ করার একই স্থানে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে পুণরায় প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কাজ না করেই সমুদয় বরাদ্দকৃত অর্থ বা চাল গম যাতে সহজেই হরিলুট বা আত্মসাত করা যায় এমন কিছু প্রকল্প রয়েছে। তিনি বলেন যেখানে ৩০ হাজার টাকা ব্যায়ে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব সেখানে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে এমন প্রকল্প দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা সরকারের অর্থের অপচয় প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যকে উৎসাহিত করবে। চেয়ারম্যানগন তাদের নিজ স্বার্থসংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে রাতের আধারে ইউএনও মেডামকে প্রভাবিত করে প্রকল্প তালিকা তৈরি ও ইচ্ছেমত ব্যায় বরাদ্দ প্রস্তুত করেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি প্রতিটি কাজের তদারকির দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই আমি (পিআইও) প্রকল্প না দেখে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্থান, রাস্তা বা প্রতিষ্ঠান সঠিক আছে কিনা যাচাই করার জন্য দুদিন সময় চেয়েছিলাম বলেই আমি ইউএনও মেডাম এবং চেয়ারম্যানদের বিরাগভাজন হয়েছি। নাম পদবী প্রকাশ না করার শর্তে বলেন এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা অশালীন অশোভন আচরণ করেছেন। চেয়ারম্যানদের সংবাদ সম্মেলনে তার প্রতি আনীত অভিযোগ প্রসংগে জানতে চাইলে বলেন, চেয়ারম্যানগন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করতে গিয়ে ভীত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর, মিথ্যাচার কথাবার্তা গণমাধ্যমে বলেছে। আমার কাজের দায়িত্বশীলতা ন্যায় নিষ্ঠা কর্তব্য পরায়ণ থেকে বিচ্যুত করবে এমন সুযোগ নেই।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন প্রকল্প যাচাই বাছাই নিয়ে মূলত সমস্যা। ইউএনও যেগুলো প্রকল্প বাছাই করেছে পিআইও সেগুলাতে স্বাক্ষর করতে চাচ্ছে না। তার নিজের মত করে প্রকল্প দিতে চাচ্ছে। আমি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি। উনি যাচাই করে দেখেছেন। সবগুলো প্রকল্প সঠিক আছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।
বিঃদ্রঃ( জনপ্রতিনিধিদের কদিন আগের গণমাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে সচেতন অভিজ্ঞ মহল এর মতামত তুলে ধরছি, “চুরির মাল হালাল করতে কমিশন দিয়েছো”। এ তথ্য বছর শেষে প্রকাশ করছো কোন মতলবে,? এবছরে মাল গুলো কারো তদারকি বা কমিশন ছাড়াই গিলে ফেলতে? এসব আলোচনা সমালোচনা লজ্জিত করে। ঘুষ গ্রহণ এবং প্রদানে অপরাধের গন্ধ ছড়াবেই)।।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।

