পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় হ্যান্ডলিং নিয়ে আধিপত্যকে ঘিরে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ও শ্রমিকদলের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘিরে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে এমন দাবীতে কুয়াকাটা পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শ্রমিক দল।
সোমবার (১৮ই নভেম্বর) রাতে ‘কুয়াকাটা পৌর শ্রমিকদলের ওপর ‘ষড়যন্ত্র মানিনা মানবোনা” জলিল ভাই’র উপরে ষড়যন্ত্র মানি না মানবো না’ স্লোগানে পৌর শ্রমিক দলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে সমবেত হয়।
এসময় পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি মানিক ফকির সহ দেড় শতাধিক নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিক দলের নেতা কর্মীরা দাবী করেন, শ্রমিক দল একটি সুসংগঠিত দল। শ্রমিক দলের মাঝে ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে অপ্রচার চালাচ্ছে। এতে তাদের সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে। শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলা মারধর করে উল্টো তাকেই দোষারোপ করা হচ্ছে।
আমরা এর বিচার দাবী করছি।
হ্যান্ডলিং এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পৌর শ্রমিক দলের মধ্যে দন্দ সৃষ্টি হয়েছে। যা পরবর্তীতে মারামারিতে রুপ নেয়।
এ দন্দ নিরসন করতে সালিশ বৈঠকে পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আঃ মান্নান চৌধুরীর উপর হামলা সহ তার আবাসিক হোটেল ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়।
আর এ হামলা ও ভাংচুরের জন্য দ্বায়ী করা হয় পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল চুকানী সহ শ্রমিক দলের নেতৃবৃন্দকে।
পৌর বিএনপি নেতা মান্নান চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তার উপর হামলা ও হোটেল ভাংচুরের কথা জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।
এরপরই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দল। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিক দলের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ দলের মধ্যেই। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌর বিএনপি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পরেছে। স্থানীয় সহ জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দ পৌর বিএনপির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
এ ঘটনা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। এরই মধ্যে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল আরো উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তবে হ্যান্ডলিং নিয়ে দন্দের পেছনে মুল দলের পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেন শ্রমিক নেতারা।
পরস্পরের বক্তব্য মতে দাবী করা হয়,
গত মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) কুয়াকাটা হ্যন্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা গোপনে মিটিং করেন। এতে পৌর শ্রমিক দলের নেতা কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করলে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে পৌর বিএনপির সদস্য মোঃ শিরু মোল্লার উপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার দ্বায় চাপানো হয় কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জলিল সুকানীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় (১৪ নভেম্বর) উভয় পক্ষকে নিয়ে পৌর বিএনপি সমাধানে বসার কথা থাকলেও উল্টো শালিসি বৈঠকে ঠেকে নিয়ে চলিল সুকানীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মানহানিকর কথাবার্তা সহ সেখানে আওয়ামী লীগের ইন্ধনে তার উপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। তবে শালিসিতে যথাসময়ে অভিযুক্ত জলিল সুকানী আসেনি বলে দাবি অপর পক্ষের। তারা বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে নানা অসংলগ্ন আচরণ করেন এবং সাগর হোটেলে ভাংচুর, হামলা করা হয়। এর জন্য দ্বায়ী করে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল চুকানীর বহিষ্কার দাবি করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেযে কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সহ সাংগঠনিক রুবেল সিকদার বলেন, আওয়ামীলীগের কিছু লোক নিয়ে বিএনপির একটি অংশ হ্যান্ডলিং নিয়ন্ত্রণ নিতে যড়যন্ত্র চালাচ্ছে, সাধারণ সম্পাদক’র উপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেদিনের ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
কুয়াকাটা পৌর শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজ বলেন, পৌর শ্রমিক দল একটি সুসংগঠিত দল, আমাদের সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল সুকানী বলেন, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার উপর হামলা চালানো হয়েছে। এবং সেই ঘটনায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করিয়াছে একটি মহল। আমি এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মতিউর রহমান মতি বলেন, এটা দলীয় একটা বিষয়, এটা নিয়ে আমরা একবার বসেছি। আশা করছি শীঘ্রই নিরসন হয়ে যাবে। ###