ঢাকাসোমবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. আজ দেশজুড়ে
  3. আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. কবিতা
  7. কৃষি সংবাদ
  8. ক্যাম্পাস
  9. খাদ্য ও পুষ্টি
  10. খুলনা
  11. খেলাধুলা
  12. চট্টগ্রাম
  13. ছড়া
  14. জাতীয়
  15. জীবনযাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শ্রমিক লীগের ইয়াকুব এখন শ্রমিক দলের হাইব্রিড

দৈনিক কালের প্রতিচ্ছবি
ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫ ২:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

*টানা ১৭ বছর লীগের খেয়ে এখন দলের হাঁড়িতে ইয়াকুবের চামচ

*শ্রমিকলীগের ইয়াকুবের গায়ে এখন শ্রমিক দলের জার্সি- বিপাকে দলের ত্যাগি নেতারা

* আগস্টে গা-ঢাকা, ডিসেম্বরে শ্রমিক দলের বাম্পারে সয়লাভ যমুনার ইয়াকুব
* চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগের জাদুকর ইয়াকুব শ্রমিকদলের কান্ডারী

নিজস্ব প্রতিবেদক- ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও পতন হয়নি দীর্ঘ ১৭ বছর কুক্ষিগত করে রাখা স্বৈরাচারের দোসরদের।দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নকে করেছেন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। যার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলো তৎকালিন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে জ্বালানি মন্ত্রী, এমপি থেকে প্রায় সবাই। আর এই রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন যমুনা অয়েলের সারা বাংলাদেশের ‘মাফিয়া’ খ্যাত শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী মো. ইয়াকুব তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। একই সঙ্গে তিনি শ্রমিক লীগ নেতাও। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে সিবিএর সাধারণ সম্পাদক ও গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছেন তিনি ।

বিগত সরকার আমলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ডামি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দায়িত্ব ভার গ্রহন করেন ইয়াকুব।আওয়ামী লীগের লোক হওয়াতে কোন প্রকার বাধা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইয়াকুব। অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় দেড়শো’ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক যমুনা অয়েলের এই মাফিয়া সাধারণ সম্পাদক। ফ্যাসিবাদী সরকারের আমল থেকে এই পর্যন্ত তাকে কোন প্রকার বেগ পেতে হয়নি রাজনৈতিক বলয়ের মদদপুষ্ট থাকায়। বহু অনিয়ম ও দূর্নীতির “গডফাদার” খ্যাত এই ইয়াকুব দুর্নীতির কারণে দুদকের মামলার আসামী বলেও জানা যায় দুদক সূত্রে।

২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩ বছর চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে মামলা হলেও স্বৈরাচারী সরকারের কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপে পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে দেয় অভিযুক্ত তৎকালীন সিবিএ সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম এবং ইয়াকুব । ইয়াকুব সাধারণ সম্পাদক হলেও রাজনৈতিক একক আধিপত্য বিস্তার করে যমুনা অয়েলকে রূপান্তর করেছে পৈত্রিক সম্পত্তিতে যার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে যমুনা ওয়েলের কর্মচারী ও সিবিএ’র সকল সদস্যকে। দীর্ঘ পনেরো বছর চাকরি করেও স্থায়ী হতে পারেনি শতাধিক কর্মচারী। ইয়াকুবের গড়ে তোলা অঢেল সম্পদের প্রতাপে তটস্থ সকল কর্মচারীরা ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা জানান, “ইয়াকুব কে রুখবে সাধ্য কার? বিভিন্ন নেতা- মহল থেকে শুরু করে আসাধু কিছু কর্মীকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিনে নেন ইয়াকুব। আর যারাই বিরোধিতা করেছিল তাদেরকে এই পর্যন্ত মাশুল গুনতে হয়েছে অনেক যা হিসেব বিহীন। এখনো তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চাইলে তাকে অস্ত্র ইয়াবা ও বিভিন্ন মামলার হুমকি দিয়ে দূরে সরিয়ে রেখেছেন ইয়াকুব।তাই কোন কিছুরই পরোয়া করে না সে।”

৫ ই আগস্টের পরে সপ্তাহ খানিক গা- ঢাকা দিলেও বর্তমানে বহাল তবিয়তে ইয়াকুব এর অপকর্ম । যমুনা অয়েল সিবিএর আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন ত্যাগী নেতাকর্মীকে হুমকি দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিরত থাকার চাপ দিয়ে যাচ্ছে ইয়াকুব। যার ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না কেউ।

অভিযোগ রয়েছে ইয়াকুব পুরো যমুনা ওয়েলের নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য সহ বিভিন্ন ডিপো থেকে প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকা মাশোহারা নিয়ে থাকেন ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিবিএর শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক ভুক্তভোগী জানান, “ইয়াকুবের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে মামলা হামলার রোষানলে পড়ে চাকরি হারানোর উপক্রম হবে। তার পেশি শক্তি ও অর্থের শক্তি ব্যবহার করে বহু মানুষকে এই পর্যন্ত নিঃস্ব করে সে।”

কিন্তু গত ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতন হলে ইয়াকুব পল্টি দিয়ে শ্রমিক দলে যোগদান করেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জানা যায়, একটানা ১৫ বছর দাপটের সাথে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া এই স্বৈরাচারের দোসর এবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগ দিয়েছে শ্রমিক দলের ব্যানার নিয়ে। আওয়ামী লীগের দাপুটে এই শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন প্রত্যেক নেতার সাথে তার ছিল দহররম মহরম সম্পর্ক। ইয়াকুবের ডাইনিং টেবিলে অনেক নেতাকে আপ্যায়ন করা হতো প্রায়ই নিয়মিত । বহু মিছিল মিটিংয়ের আয়োজন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ব্যয় করেছেন শত কোটি টাকা। বানিয়েছেন নিজস্ব আওয়ামী গ্যাং। কখনো কখনো লীগের এমপি মন্ত্রীদের আনুষ্ঠানিকতার মূল আয়োজনকারী ছিলেন এই ইয়াকুব। অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার ফলে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গত ২৪ শে ডিসেম্বর বিএনপি’র শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন থেকে শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আসেন ইয়াকুব। উক্ত বিষয়কে ঘিরে সিবিএ’র শ্রমিক দলের অন্যান্যদের মধ্যে ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সিবিএ’র আসন্ন নির্বাচনের প্রতীক নিয়ে নেন এই দোসর।

কর্মচারীদের দেয়া তথ্যে আরও উঠে এসেছে অস্থায়ী নিয়োগে যারা ২০১০ সালে যোগদান করেছেন তারা এখনো স্থায়ী হতে পারেননি। সারা বাংলাদেশ জুড়ে বিগত ১৭ বছরে ইয়াকুবের প্রায় অর্ধশতাধিক আত্মীয়-স্বজন নিয়োগ পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে।
পুরো যমুনা অয়েল দেশব্যাপী তার কথায় উঠানামা করতে হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কিভাবে সাবেক ফ্যাসিবাদ সরকারের একজন দোসর হয়ে এখনো পর্যন্ত দাপটের সাথে ইউনিয়নের সদস্য ও কর্মচারীদের হয়রানি করছে।

ভুক্তভোগী শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ও কর্মচারীদের দাবী, ছাত্র জনতার আন্দোলন আর ত্যাগের ফলশ্রুতিতে পাওয়া স্বৈরাচার মুক্ত এই দেশে স্বৈরাচারের এই দোসর যমুনা অয়েলে পুনরায় স্বৈরাচারের পুনর্বাসনে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যার কারণে এখনও যমুনা অয়েলের কর্মচারীরা অস্বাভাবিক ভীতি ও আতঙ্কিত সময় পার করছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করা হয়। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিঃ দ্রঃ - বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।